লালন হাসন মাইজভাণ্ডারী গান : একটি অন্বিষ্ট পর্যবেক্ষণ (হার্ডকভার)

বাউল ঘরানার শ্রেষ্ঠতম প্রতিনিধি ফকির লালন শাহ (১৭৭৪-১৮৯০), রীরংসার উলঙ্গ প্রকাশ থেকে আত্মোপলব্ধির ঐশী গীতিকার দেওয়ান হাসন রাজা (১৮৫৪-১৯২২) এবং ‘মাইজভাণ্ডারী তরিকার সাংস্কৃতিক দূত’ কবিয়াল রমেশ শীল (১৮৭৭-১৯৬৭)। প্রায় সমসাময়িক এই তিন যুগস্রষ্টা গীতিকারের প্রকাশ-বিকাশের আকর্ষণীয় ত্রিমাত্রিক বিশেষত্ব সত্যিই অত্যাশ্চর্য এবং প্রায় পরস্পরবিরোধী। অথচ তাঁদের অপূর্বসৃষ্টির সারকথা এক মোহনায় এসে মিলিত হয়েছে। ‘মানবধর্ম চর্চার ইতিহাসে’ যা বাংলার চিরায়ত শাশ্বত মানস-সম্পদে পরিগণিত হয়ে উঠেছে অবলীলাক্রমে।

‘অন্নপাপে সমাজচ্যুত’ হয়ে সুতীব্র মনোবেদনায় আত্মজিজ্ঞাসার ফসল লালনের গান। রীরংসার উলঙ্গ প্রকাশের তীব্র মনোবেদনার চূড়ান্ত আত্মজিজ্ঞাসার ফসল হাসনরাজার মরমী গান। পক্ষান্তরে জনপ্রিয় যুগশ্রেষ্ঠ হিন্দু কবিয়াল রমেশ শীল মুসলমানের মাইজভাণ্ডারী গান লিখে সমাজচ্যুতÑ কী এক বিচিত্র কথকতা-অভিনব অত্যাশ্চর্য চালচিত্র।

জ্ঞানের জগতে নতুন মাত্রিক চিন্তা-চেতনার দ্বার উদ্ঘাটন, একইসাথে বাংলার সমাজ জীবনের পরতে পরতে বিচিত্র বহুমাত্রিক বিশেষত্বের চালচিত্র অনুধাবনে লালন-হাসন-মাইজভাণ্ডারী গানের তুলনামূলক পর্যবেক্ষণ বাংলা গানের বিবর্তনের ধারায় উচ্চতর গবেষণার ক্ষেত্রেও আকর্ষণীয় নতুন মাত্রিকতায় সংযোগ ঘটাবে। এই বইয়ে উপস্থাপিত জ্ঞানগর্ভ তত্ত্ব-তথ্য-উপাত্তের সমাহার এবং একইসাথে উপস্থাপনার মুন্সিয়ানায় এই সত্যটি উচ্চারণ করা যায় নিঃসন্ধিগ্ধচিত্তে।