বাংলাদেশটি এত জনবহুল, এত নদী, ১৯৫২ (ভাষা আন্দোলন), ১৯৭১ (মুক্তিযুদ্ধ), হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি,মুক্তিযোদ্ধা, বীরশ্রেষ্ঠ, বীর-উত্তম, বীর বিক্রম, বীরপ্রতীক, বাংলার বাঘ, ঘোষিত-অঘোষিত কয়েক কোটি দেশপ্রেমিক থাকার পরেও কেন সোনার বাংলাকে বিশ্ববাসী চিনে না। জাতি কি এতটাই এতটাই নিষ্ক্রিয়? এতটাই গরিব? এতটাই দুর্বল? যে পৃথিবীবাসীকে চেনাতে ব্যর্থ। আমার দৃষ্টিতে, তার দুটো কারণ থাকতে পারে। এক. উন্নত বিশ্বের যুবক-যুবতিরা ভূগোল এবং ইতিহাস পড়ে না, কারণ তাদের সাধরণজ্ঞানের পরী¶া দিয়ে কাজে টিকতে হয় না। দুই : আমরা ব্যর্থ হয়েছি সারা পৃথিবীকে নিজেদের দিকে আকর্ষিত করতে, কারণ নিজেদের কাছে প্রাকৃতিক সব উপকরণ পর্যাপ্ত পরিমাণ থাকার পরেও শক্তিশালী দেশ হিসেবে জেগে উঠতে পারি নাই। ঠিক যখন বাংলাদেশের সামরিকবাহিনীতে (সেনা, নৌ, বিমান) কল আপ লেটার পেয়ে ইন্টারভিউ দিতাম। ঢাকার অতি নিকটে থাকা আমাদের গ্রামকে চেনাতে হতো নানা কৌশল করে; এয়ারপোর্টের পাশে বা পূর্ব দিকে, বসুন্ধরা হাউজিংয়ের উত্তরে, পূর্বাচলের আগেই, বিশ্ব রোড থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে। সে সময় গুগল ম্যাপের প্রচলন ছিল না। থাকলে হয়তো সব অফিসারকে ঠিকানা সহজেই দেখতে পারতাম। না চিনলেও তেমন কষ্ট পেতাম না। কারণ চেনার মতো কিছুই করতে পারেনি আমাদের সুন্দর গ্রামটি। না বিখ্যাত কোনো ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, শি¶াবিদ, রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ, কবি-সাহিত্যিক, শি¶ক, বিচারপতি জাতির সামনে উপ¯’াপন করতে পেরেছে, না পরিচিতি পেয়েছে। কষ্টের ব্যাপার, আমার বেশিরভাগ বিদেশি বন্ধুবান্ধব সুজলা, সুফলা, শস্যশ্যামলা বাংলাদেশকে চিনে না। বিশ্বের অন্যতম বড় বদ্বীপকে চিনে না। বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকতের দেশটাকে চিনে না। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনের দেশকে চিনে না। তাই নিজ তাগিদেই, দায়িত্ব নিয়ে কর্মঠ, সাহসী, আশাবাদী জাতি এবং দেশকে বিশ্বের কাছে পরিচয় করিয়ে দি”িছ ও দিতে থাকব। হয়তো তারা বাংলাদেশকে নিয়ে কখনো জানবে ও গবেষণা করবে। আমাদের প্রিয় শি¶ক খলিলুর রহমান বলতেন; একটা সময় সারা বিশ্বকে বাংলদেশের কাছে আসতে হবে কারণ যে দেশে কয়লা আর গ্যাস পাওয়া যায় সে দেশে খুব দ্রুত সোনা, রুপা ও তেল পাওয়া যাবে। আশা করা যায়, অদূরভবিষ্যতে পিছিয়ে থাকা, গরিব ও নানা সমস্যায় জর্জরিত বাংলাদেশিদের মাথাপিছু আয় হবে সোয়া আট ল¶ মার্কিন ডলারের চেয়েও বেশি।
তরুন লেখক সাব্বির আহম্মেদ ১৯৭৮ সালে ২৫ অক্টোবর কুমিল্লা জেলা চান্দিনা উপজেলা বরকরই গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতা: মরহুম আব্দুর রহীম, মাতা: বেগম আনােয়ারা। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লিখে আসছেন। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন সাপ্তাহিক, মাসিক ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় নিয়মিত লিখছেন। একাধারে ছড়া, কবিতা, বিজ্ঞান কল্পকাহিনী, গদ্য, উপন্যাস এবং কমপিউটার বিষয়ে লিখছেন। তাঁর প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ উত্তর আধুনিক বেহুলা, দ্বিতীয় গ্রন্থ কমপিউটারের কথা।