চলমান সভ্যতা মানবজাতিকে এমন চূড়ান্ত ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে, যার থেকে উদ্ধার হতে দুনিয়ার ইতিহাসে প্রথমবার ইসলাম মানুষকে উদ্ধার করতে আসবে, আবার একই সাথে মানুষও নিজ থেকে ইসলামকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চাইবে। সেই মহান ইসলামি সভ্যতার কারিগর যারা হবেন, বিনির্মাণকারী কিংবা পরিচালক যারা হবেন, তারা হলেন আজকের তরুণ প্রজন্ম। সেই তরুণ প্রজন্মকে আগামী সভ্যতার ধারক-বাহক হিসেবে গড়ে উঠতে হলে কী পরিমাণ ত্যাগ, পরিশ্রম, জ্ঞান, মানসিকতার হতে হবে, সেটা হয়তো আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না।একজন তরুণের জন্য ভাল থাকাটা খুবই চ্যালেঞ্জিং হলেও তার খারাপ হওয়াটা অত্যন্ত সহজ। কারণ, এ সময়টাতে একজন তরুণকে হাতছানি দিয়ে ডাকতে থাকে অসংখ্য অশুভশক্তি। এটাকে এভাবে প্রকাশ করা যায় যে, কচুর পাতার পানি যেমন টলমল করে যেকোনো মুহূর্তে পড়ে যেতে পারে, ঠিক তেমনি একজন তরুণ যেকোনো সময় নষ্ট হয়ে যেতে পারে। যেকোনো সময় হয়ে যেতে পারে, তার জীবনের সব কিছু এলোমেলো। বর্তমান সময়ে গোটা বিশ্বের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই, বর্তমানে যুবক শ্রেণি বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ও সংকটে নিপতিত। তারা তাদের জীবনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ উদাসীন। তাই যুব সমাজকে সচেতন করা এবং তাদেরকে অশুভশক্তির করাল ঘ্রাস থেকে রক্ষা করার জন্য চেষ্টা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।আগামী সভ্যতা বিনির্মাণকারী সেই তরুণ প্রজন্ম কেমন হবে? তাদেরকে এখনই যেভাবে দেখতে চাই, লেখক তার স্বপ্নবাজ মনে সেটার আহ্বান নিয়েই আপনাদের সামনে মনের আকুতি মিশ্রিত রঙতুলি দিয়ে একটি চিত্র এঁকেছেন, যার নাম, যেমন তরুণ চাই!
ব্রিটিশ চলে গেছে সেই ৭৫ বছর আগেই। কিন্তু তাদের প্রসূত চিন্তাচেতনা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে আজো আমাদের তরুণেরা। আমাদের তরুণেরা সবসময় স্বপ্ন দেখে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হবো। কিন্তু আজ আর কেউ স্বপ্ন দেখে না! আমরা ইবনে সিনা, আল ফারাবি, আল বাত্তানি, আল খাওয়ারিজম, ইবনে খালদুন হবো, যাদের বই পড়ে মানুষ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার কিংবা প্রফেসর হবে। আমাদের তরুণেরা স্বপ্ন দেখে একটা সেনাবাহিনীর চাকরি আর এতেই তার স্বপ্ন ও জীবনের পরিধি শেষ। কিন্তু সে একবারো ভাবে না, মাত্র ১৬ বছর বয়সের একজন তরুণ নিজেকে সেনাবাহিনীর সৈনিকদের ভিতরেই সীমাবদ্ধ রাখেননি বরং সেনাপতি হয়ে উপমহাদেশে বিজয় করে ছিলেন। যিনি তার বীরত্বের কারণে যুগ যুগ ধরে অমর হয়ে আছেন আমাদের মাঝে।
আমাদের তরুণেরা যেন দুনিয়ার বুকে যা ইচ্ছা করতে পারবে শুধুমাত্র খোদায়ি কাজ ছাড়া। কিন্তু আজ তারা কিছুই পারছে না, আসলে তারা পারছে না এমনটা নয় বরং তাদেরকে পারতে দেওয়া হচ্ছে না। ছোট্ট একটি চাকরি আর কিছু মানুষকে সুখে রাখার দায়িত্ব নিয়েই মহা-তৃপ্তির ঢেকুর তুলছে। যেখানে তারা একেকজন একেকটি জনপদের মুখে হাসি ফুটাতে সক্ষম। তাদেরকে বস্তুবাদ, পুজিবাদ, ভোগবাদের জালে বন্দি করে রাখা হয়েছে। যেভাবেই হোক তাদেরকে প্রচুর অর্থ আয় করতে হবে কিন্তু মহৎ কোনো জীবনবোধ, মূল্যবোধের ব্যাপারে তারা একটুও সচেতন না।
আমাদের এই অসচেতন তরুণদের সচেতন করা, তাদের হৃদয়কে জাগ্রত করা, সমৃদ্ধ আগামী নির্মাণে তাদেরকে শানিত করার প্রচেষ্টা নিয়ে রচিত হয়েছে এই বইটি।
মাসুদ রানা সাগর। শেখ সাগর নামেই পরিচিত। জন্মেছেন চুয়াডাঙ্গার বিষ্ণুপুরে। শেখ রবিউল হকের মেঝো সন্তান। জীবনের সাতরং পেরিয়ে এসে ঠাঁই মিলেছে ইসলামী জীবনাদর্শের কাছে। আধুনিকতার নির্লজ্জ মোহে আচ্ছন্ন হয়ে থাকা বর্তমান প্রজন্ম ফিরে আসুক হিদায়াতের পথে। সেই আলোকিত প্রহরের অপেক্ষায় লেখকের নিরন্তর প্রচেষ্টা। স্বপ্ন দেখেন একটি ইসলামী সমাজ ব্যবস্থার, যেখানে ইনসাফ ও আদালতের মাধ্যমে অন্যায়, জুলুম মূলোৎপাটিত হবে, ইনশাআল্লাহ। প্রকাশিত বই : যুবক! ইউ আর দ্যা গেম চেঞ্জার, যেমন তরুণ চাই, তৃষ্ণার্ত মুসাফির।