পৃথিবীর প্রথম অন্ধ গোয়েন্দা ম্যাক্স ক্যারডসের বাংলা অনুবাদ চলে এসেছে ১৭৬ নম্বর স্টলে। ভিক্টোরিয়ান যুগে যে গুটি কয়েক গোয়েন্দা জনপ্রিয়তার শার্লকের সমকক্ষ হয়ে উঠেছিলেন ম্যাক্স ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর ফ্যানেরা তাঁকে দ্যা ডিফেকটিক ডিটেকটিভ নামে ডাকত।
ম্যাক্সের ইন্দ্রিয়গত সীমাবদ্ধতা লেখক বুঝতেন। আর তিনি তা বুঝতেন বলেই ম্যাক্সের গল্প গুলো সাধারণ খুন, চুরি বা ছিনতাইয়ের কেস হত না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা ছিল আর্থিক তছরুপের গল্প। সেই সময়ে দাঁড়িয়ে এই ধরনের হোয়াইট কলার ক্রাইম নিয়ে খুব কম গোয়েন্দা লেখকরাই লিখছিলেন। তাই ম্যাক্সের গল্পগুলো সমকালের নিরিখে বেশ আলাদা যেখানে চর্ম চক্ষুর তুলনায় মানস চক্ষুর প্রয়োজন ছিল বেশি।
এহেন গোয়েন্দা চরিত্রের লেখক আর্নেস্ট ব্রামা ঠিক কী ভেবে ম্যাক্সকে তৈরি করেছিলেন, সে প্রশ্ন কিন্তু পাঠকদের মনে আসতে বাধ্য। লেখক ছিলেন নিভৃতচারী। তাঁর ব্যক্তি জীবন নিয়ে খুব কম জানা যায়। আমি ও দীপ্তজিৎ যৌথভাবে যখন এই অনুবাদের কাজ করছিলাম আমাদের লক্ষ ছিল যেন কাজটা সব দিক থেকে ভালো হয়। ঠিক সে কারণেই আমরা খোঁজা খুঁজি করতে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় পেতে থাকি যে আর্নেস্ট ব্রামা জীবদ্দশায় ম্যাক্সকে নিয়ে একটিই ইন্টারভিউ দিয়েছিলেন বিবিসি রেডিওতে। কিন্তু সেটার আসল কপি আজকের দিনে অমিল। অনেক খোঁজা খুঁজি করে তাঁর একটি লেখ্য রূপ একটি বহু পুরানো পত্রিকায় পাওয়া যায়। থাকছে সেই দুষ্প্রাপ্য ইন্টারভিউয়ের অনুবাদ। যা পড়লে পাঠক বুঝতেই পারবেন, লেখক একপ্রকার সেই সময়ের জনপ্রিয় গোয়েন্দা লেখকদের নিয়ে জাস্ট খিল্লি করছেন। তিনি ম্যাক্সকে কিছুটা প্রচলিত গোয়েন্দা গল্পের ধাঁচকে ব্যাঙ্গ করতেই সৃষ্টি করছেন। অথচ পাঠক সেই ম্যাক্সকেই এতটা ভালোবাসা দিচ্ছেন, যে বাধ্য হয়ে লেখকে এই গোয়েন্দাকে নিয়ে চারটে খন্ড বই লিখে ফেলতে হল।