ইতিহাস কেবল কালি দিয়ে লেখা হয় না, কখনও কখনও তা লিখতে হয় রক্ত, অশ্রু আর আত্মত্যাগ দিয়ে। ২০২৪ সালের জুলাই মাস ছিল বাংলাদেশের জন্য তেমনই এক রক্তে লেখা অধ্যায়। যখন অন্যায় ও বৈষম্য সব গ্রাস করে নিয়েছিল, তখন মুক্তির পথ তৈরি করতে সবার আগে এগিয়ে এসেছিল অকুতোভয় তরুণেরা, এরপর সর্বস্তরের জনতা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে জন্ম নেওয়া সেই গণঅভ্যুত্থান কেবল একটি সফল বিপ্লব নয়, এটি এক নতুন প্রজন্মের জেগে ওঠার গল্প। শহীদ আবু সাঈদ, ইয়ামিন, মুগ্ধ, ওয়াসিমসহ নাম জানা ও না জানা অসংখ্য শহীদের রক্তে এই মাটি পবিত্র হয়েছে এবং স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে এক নতুন ভোরের সূচনা করেছে। তাদের রক্তের স্বাক্ষরেই লেখা হয়েছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় মুক্তির সনদ।
সেই শহীদ ও আহত বীরদের প্রতি আমাদের গভীর দায়বদ্ধতা রয়েছে। তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার পাশাপাশি তাদের আত্মত্যাগের ইতিহাস নিয়ে অনেক কবিতা, গল্প, নাটক ও উপন্যাস রচনা করে তাদেরকে লেখনির মাধ্যমে বাঁচিয়ে রাখাও আমাদের দায়িত্ব। সেই দায়িত্ববোধ থেকেই ‘রক্তের স্বাক্ষর’ উপন্যাসটি লেখার চেষ্টা।
এটি কোনো শুষ্ক ইতিহাসের বই নয়, বরং সেই উত্তাল দিনগুলোতে একদল তরুণের চোখে দেখা এক জীবন্ত আখ্যান। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র সাজিদ, খালিদ, আলি, কিংবা গল্পকথক 'আমি' —এরা কেবল কাল্পনিক কোনো চরিত্র নয়, বরং তারা সেই সময়ের হাজারো আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরই প্রতিচ্ছবি। তাদের ভয়,আশা, ক্রোধ আর আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা সেই গণজাগরণের মুহূর্তগুলোকে অনুভব করতে পারব।
এই উপন্যাসটি সেই সকল বীর শহীদের প্রতি এক বিনম্র শ্রদ্ধার্ঘ্য, যারা নিজেদের জীবন দিয়ে আমাদের একটি নতুন সকাল উপহার দিয়েছেন। এটি আমাদের বারবার মনে করিয়ে দেবে, কত বড় আত্মত্যাগের বিনিময়ে এই বিজয় অর্জিত হয়েছে। ‘রক্তের স্বাক্ষর’কেবল একটি উপন্যাস নয়, এটি সেই শহীদদের নামে উৎসর্গীকৃত এক স্মৃতিস্তম্ভ, যাদের রক্তের স্বাক্ষরে লেখা হয়েছে এক নতুন বাংলাদেশের নাম।
ঢাকা'র সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি পাস করেছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা'য় আইন বিভাগে অধ্যয়ন করছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি ইসলামী ও জীবনঘনিষ্ঠ নানা বিষয় নিয়ে পড়াশোনা ও লেখালেখি করতে পছন্দ করেন।