এই পৃথিবী, সমাজ ও রাষ্ট্রের গতি কখনোই সরলরেখায় চলে না। প্রতিটি সমাজে, প্রতিটি দেশেই অগণিত সংগ্রাম, বহমান অস্থিরতা, নতুন নির্মাণের স্বপ্ন এবং হতাশা মিশে একটি জটিল বাস্তবতার জন্ম দেয়। এই বাস্তবতায় আমাদের জীবনযাত্রা, সংগ্রাম, সংকট— সবই এক অবিরাম দোলাচল। যেখানে একটি বাঞ্ছিত উত্তর খুঁজে পেতে সমাজ ও মানবমুখী দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবনা ও বিশ্লেষণ প্রয়োজন হয়। এ প্রবন্ধ সংকলন ‘অপাঙ্ক্তেয় কথন’-এ তেমন কিছু ভাবনা ও বিশ্লেষণ উপস্থাপিত হয়েছে।
সংকলনটিতে সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ইতিহাস, বৈশ্বিক সম্পর্ক, উন্নয়ন এবং মানবাধিকার-এর মতো বহুবিধ বিষয় সন্নিবেশিত হয়েছে। অন্তর্ভূক্ত প্রবন্ধসমূহ বস্তুবাদি এ্যপ্রোচ-এ বিশ্লেষণ করা।
‘অপাঙ্ক্তেয় কথন’ নামটিই এক বিশেষ নেতিবাচক দ্যোতনাকে মনে করিয়ে দেবে। ভাবনা ও বিশ্লেষণে যে সকল বিষয় এবং বক্তব্য অভিমত হিসেবে এসেছে, সেগুলোকে লেখক চলতি মূলধারার ভাবনা হিসেবে মনে করেন না। চিন্তা এবং উপস্থাপনের এই বিশেষ ধরণটিই লেখকের বক্তব্যকে তথাকথিত মূলধারা থেকে অনেকটাই দূরবর্তী ও অপাঙক্তেয় মনে হবে। এখানে খুব সচেতনভাবেই অপ্রচলিত অথচ প্রয়োজনীয় ধারণাগুলিকে কিছু শিরোনামে একমলাটে নেওয়া হয়েছে।
লেখকের বিশ্বাস, সমাজপ্রগতি, দেশের উন্নয়ন— এসব রাষ্ট্রের একার দায়িত্ব নয়। দেশের, সমাজের কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের পথে সবারই সচেতন অংশগ্রহণ প্রয়োজন। ‘অপাঙ্ক্তেয় কথনে’ সেই সম্মিলিত যুথবন্ধতার প্রয়োজনীয়তার দিকটিকে বিশেষভাবে উচ্চকিত করা হয়েছে। এই সংকলন শুধু সংকট-অস্থিরতার বিশ্লেষণ নয়, বরং এতে মানবিক মূল্যবোধ, ন্যায্যতা, সম্মান এবং সাম্য প্রতিষ্ঠার উপাদনগুলিই প্রধান।
‘অপাঙ্ক্তেয় কথন’ সমাজের পরিবর্তন, উন্নয়ন এবং মানবাধিকারের বুনিয়াদি বিষয়গুলিকে সামনে নিয়ে আাসুক, চিন্তা ও কর্মে গণমুখী প্যারাডাইম গড়ে উঠুক— এই প্রত্যাশাই করছি।