—ওই চুপ! একদম চুপ, কোনো শব্দ করবি না, নইলে খুলি উড়িয়ে দেব!
—স্যার, আপনার পায়ে পড়ি, ওকে কিছু করবেন না। ওর বদলে আমাকে...।
—ওই ছ্যামড়ি, বললাম না চুপ করতে।
শুরুটা হয় ইতির দেখা একটি স্বপ্নের মাধ্যমে। তারপর সে ফিরে যায় তিন বছর আগে। স্মৃতির ধূসর পাতা উল্টিয়ে দেখে, সেদিন ইমতিয়াজের সঙ্গে কী হয়েছিল? ইতির মুখেই শোনা যাক বাকিটা:
...কিশোরগঞ্জ শহর থেকে আমাদের গ্রামের দূরত্ব ষোলো কিলোমিটার। গ্রামের নাম রসুলপুর। করিমগঞ্জ হয়ে চামড়া-বালিখোলা-রোডে ৫ কিলোমিটার যাওয়ার পর, ব্রিজে নেমে দক্ষিণে এক কিলোমিটার গেলেই আমাদের গ্রাম। আঁকা-বাঁকা পথ। পথের দুই পাশে গাছগাছালির সারি। পাকা-কাঁচা রাস্তার দুই ধারে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের মিলনমেলা। পুরো গ্রাম সবুজাভ। সকাল-বিকাল পাখপাখালির কিচিরমিচির শব্দে মনোবীণার তন্ত্রে মৃদু সমীরণ বয়ে যায় এখানে।
উত্তর-পুবে নরসুন্দা নদী বহমান। দক্ষিণে ছোটো একটা বিল। পশ্চিমে কিরাটনের শুরু। পুব দিকে পাঁচ-ছয় কিলোমিটার অদূরে ‘মিনি কক্সবাজার’ খ্যাত বালিখোলা-ঘাট, বর্ষাকালে যেখানে প্রতিদিন শতো পর্যটকের ভিড় জমে। রাজধানী-শহরসহ অন্যান্য শহর থেকেও নানান পেশার মানুষ সেখানে ভিড় করেন।
বেশিরভাগ পর্যটকই পানি দেখতে আসেন। তবে আমরা যেতাম সন্ধ্যাকালীন হাওরে পানির সঙ্গে চাঁদের মিতালি দেখতে। আমার দাদা করিমুদ্দিন ছিলেন এই গ্রামের পুরোধা ব্যক্তি। ...
... সানজিদা ইমতিয়াজের উদ্দেশে একটি চিঠি লিখেছে:
“প্রিয়তমেষু!
আশা করি আপনি ভালো আছেন। ভালো না-থাকার কোনো কারণ নেই। কেননা আল্লাহ তায়ালা আপনাকে কী না দিয়েছেন? অনিন্দ্য-সুন্দর মনের একজন মা দিয়েছেন। একান্ত বাধ্য একজন বোন দিয়েছেন। কোনো ভাই দেননি। তাতে কী! কোরআন সুন্নাহর জ্ঞান দিয়েছেন। আর আপনার ভেতর মহানুভব একটি মন দিয়েছেন। সর্বপোরি আপনার ভবিষ্যৎ-সঙ্গিনী হিসেবে আমাকে দেবেন। আপনি কি জানেন, আমি আপনাকে কত্ত ভালোবাসি?”...