এখন আমরা যে নবীর আলোচনা করবো, তিনি মহানুভব।
তিনি মাফ করে দেওয়ার এক মহান দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করে গিয়েছেন।
যিনি স্বপ্নে দেখেছেন এগারোটি তারকা এবং চাঁদ-সূর্য তাঁকে সিজদা দিতে।
তাঁর নামে মহান আল্লাহ নাযিল করেছেন কুরআনে স্বতন্ত্র একটি সূরা।
আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওই নবীর কাহিনি শুনিয়েছেন তাঁর প্রিয় সাহাবাগণকে।
তাঁকে খেয়েছে বাঘে!
নাহ্, তাঁকে বনের বাঘে খায়নি! খেয়েছিলো মানুষরূপী বাঘ। সেই মানুষরূপী বাঘেরাই তাঁকে ষড়যন্ত্র করে ফেলে দিয়েছিলো কূপে!
কেনো? তাঁর জীবনপ্রদীপ নিভিয়ে দেওয়ার জন্য!
এই পৃথিবীর আলো-বাতাস থেকে তাঁকে দূরে ঠেলে দেওয়ার জন্য!
কিন্তু না, এরপরও তিনি বেঁচে ছিলেন! একটা প্রবাদ আছে না! ‘রাখে আল্লাহ মারে কে?’ আল্লাহই তাঁকে বাঁচিয়েছেন।
তাঁকে বিক্রির জন্য উঠানো হয়েছে বাজারে। তাঁকে কিনেছেন এক বাদশাহ চড়া দাম দিয়ে।
আস্তে আস্তে তিনি বেড়ে ওঠেন, ওই বাদশাহর ঘরে।
কিন্তু না! এখানেও তাঁকে পড়তে হলো এক কঠিন পরীক্ষায়।
সেই পরীক্ষায় তিনি পাস করেছেন। সেই পরীক্ষায় পেয়েছেন এক শতে এক শ।
তবে এই পরীক্ষায় তিনি পাস করলে কী হবে! তাঁর জন্য অপেক্ষা করছে দ্বিতীয় পরীক্ষা। সেই পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি জেলখানায় বসে।
সময়ের পায়ে তো চাকা লাগানো, তাই সময় বয়ে চলছে নিজ গতিতে।
এরপর তাঁর জন্য এসেছে এক বড়ো নিআমত!
যে নিআমত পেয়ে হয়েছে মিসরবাসী ধন্য। তাঁর দানে পাশের দেশগুলো পেয়েছে অন্ন।
ওহ্ হো বন্ধুরা! আমি যাঁর আলোচনা করছি, তোমরা তো তাঁকে চিনতে পারোনি, তা-ই না? চলো তাহলে আগে তোমাদেরকে তাঁর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিই।
প্রথমেই তাঁর নাম বললে তোমরা তাঁকে চিনতে পারবে না। তাই আমাদেরকে যেতে হবে পেছনের ইতিহাসে।
তোমরা ইবরাহীম আলাইহিস সালামকে চেনো। ওই যে মনে পড়ে, কুড়াল দিয়ে মূর্তিদের যিনি ভেঙে চুরমার করেছিলেন। হ্যাঁ, তাঁর নাম ইবরাহীম আলাইহিস সালাম। তাঁর এক ছেলের নাম ইসহাক আলাইহিস সালাম। তাঁরই সন্তানের নাম ইয়াকূব আলাইহিস সালাম। এই ইয়াকূব আলাইহিস সালাম-এর বারো ছেলে। বারো ছেলের এক ছেলের নাম ইউসুফ আলাইহিস সালাম। তিনিই আজ আমাদের গল্পের মধ্যমণি। তাঁকে নিয়ে আমাদের আজকের আসর।
হ্যাঁ, তিনি নবীর সন্তান, পরে তিনিও নবী হয়েছেন।
ছোট্ট ইউসুফ ছিলেন ইয়াকূব আলাইহিস সালাম-এর প্রিয় পুত্র। তিনি তাঁকে আদর করতেন। সোহাগ করতেন। তাঁকে তিনি চোখে চোখে রাখতেন। আদর আর সোহাগেই বেড়ে উঠছেন তিনি।
তবে বন্ধুরা! তোমাদেরকে তাঁর সম্পর্কে একটা কথা বলে রাখি। ইউসুফ আলাইহিস সালাম ছিলেন খুবই শান্ত, ভদ্র এবং দয়ার সাগর। তাঁর রূপ ছিলো দুনিয়াখ্যাত। যদি বলা হয় তিনি পৃথিবীর সব পুরুষ থেকে অধিক সুন্দর ছিলেন, তাহলে বাড়াবাড়ি হবে না। তাঁর চেহারা ছিলো নূরে নূরে ভরা।