কাদিয়ানিজমকে অনেকেই কেবল একটি ধর্মতাত্ত্বিক মতবাদ হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন। কিন্তু এই গ্রন্থে এই মতবাদের অন্তরালে থাকা প্রকৃত সত্যকে তুলে ধরা হয়েছে। দেখানো হয়েছে ঔপনিবেশিক শাসন, সাম্রাজ্যবাদী কূটকৌশল এবং জায়নবাদী রাজনীতিতে কাদিয়ানিদের সক্রিয় ভূমিকা কতটা সুদূরপ্রসারী ছিল । লেখক এখানে কেবল মতবাদ খণ্ডনের প্রথাগত পথে অগ্রসর হননি; বরং মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে পরিচালিত একটি সুপরিকল্পিত ভূ-রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার নীলনকশা হাজির করেছেন। বিশ্লেষণ করেছেন দলিলনির্ভরভাবে।
গ্রন্থটিতে উনিশ শতকের ব্রিটিশ ভারতে কাদিয়ানিজমের উদ্ভব থেকে শুরু করে বিংশ শতকে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পটভূমি পর্যন্ত কাদিয়ানিদের কর্মতৎপরতার একটি সুসংহত ঐতিহাসিক ধারাবিবরণী পাওয়া যায়। প্রাসঙ্গিক দলিল-তথ্য ব্যবহার করে লেখক বিশ্লেষণ করেছেন—কীভাবে ঔপনিবেশিক শক্তি নিজেদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনে কাদিয়ানিজমকে একটি কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছিল; মুসলিম সমাজে জিহাদের চেতনাকে দুর্বল করার পেছনে এর অন্তর্নিহিত লক্ষ্য কী ছিল; জায়নবাদী আন্দোলনের সাথে এর সম্পর্ক কতটা নিবিড় এবং ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় এর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা কী ছিল।
গ্রন্থটিতে দেখানো হয়েছে, ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস, মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও সমন্বয়ের সামনে কাদিয়ানিজম কেবল একটি ধর্মতাত্ত্বিক চ্যালেঞ্জ নয়, বরং সাম্রাজ্যবাদী রাজনীতির অংশ হিসেবে একটি গভীরতর ঐতিহাসিক বাস্তবতা। ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা বৈশ্বিক ষড়যন্ত্রের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট অনুধাবনের জন্য এ গ্রন্থটি পাঠ করা জরুরি।