বাংলাদেশ ও বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চলসহ পৃথিবীর সকল দেশের কবিগণ যুগে যুগে স্ব-স্ব দেশের ভাষার ছন্দরীতিতেই নতুন নতুন কবিতার সৃষ্টি করেছেন।
তবে ৫-৭-৫-৭ মাত্রাবিন্যাসে চার(৪) পঙ্ক্তির অণুকথন সৃষ্টির আগে বাংলা ভাষার ছন্দরীতিতে সৃষ্ট কোনো ক্ষুদ্রতম কবিতা বাংলাসাহিত্যে ছিল না। বস্তুত ৫-৭-৫-৭ মাত্রাবিন্যাসে চার(৪) পঙ্ক্তির অণুকথনই হলো বাংলা ঘরানা ও ভাবধারায় এবং বাংলা ভাষার ছন্দরীতিতে সৃষ্ট একমাত্র ক্ষুদ্রতম কবিতা; যা পঙ্ক্তি অনুযায়ী পাঁচ(৫) ও সাত(৭)-এর মাত্রা ও পর্ব সম্পূর্ণভাবে ঠিক রেখে মাত্রাবৃত্ত ছন্দ, অক্ষরবৃত্ত ছন্দ ও স্বরবৃত্ত ছন্দ/শ্বাসাঘাতে (সিলেবল) রচিত হয়েছে।
বিশ্বের অপরাপর দেশের ভাষার ছন্দশাস্ত্রে মাত্রাবৃত্ত ও অক্ষরবৃত্ত ছন্দের কোনো অস্তিত্ব নেই। একমাত্র বাংলা ভাষাতেই এ দু'ছন্দের অস্তিত্ব বিদ্যমান। তাই বাংলা ভাষার ছন্দরীতি অনুসারে পাঁচ(৫) ও সাত(৭)-এর মাত্রা ও পর্ব সম্পূর্ণভাবে ঠিক রেখে মাত্রাবৃত্ত ও অক্ষরবৃত্ত ছন্দে রচিত চার(৪) পঙ্ক্তির অণুকথন একমাত্র বাংলা ভাষাতেই লেখা সম্ভব। এ কারণে বলা যায় বাংলা ভাষার ছন্দশাস্ত্র বিশ্বের অপরাপর দেশের ভাষার ছন্দশাস্ত্রের তুলনায় অত্যন্ত সমৃদ্ধ।
কবিতা হচ্ছে পাখির মতন। যা কোনোরূপ বাধা-বিঘ্ন ছাড়াই বিশ্বের সকল সীমান্ত অতিক্রম করে। একারণে সনেট, লিমেরিক, হাইকু, তানকাসহ বিশ্বসাহিত্যের সমস্তকিছু কোনো বাধা-বিঘ্ন ছাড়াই পৃথিবীর সকল আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করে দেশদেশান্তরে ছড়িয়ে পড়ে। তাই আমার বিশ্বাস, ৫-৭-৫-৭ মাত্রাবিন্যাসে রচিত চার(৪) পঙ্ক্তির অণুকথনও অচিরেই বিশ্বের প্রতিটি দেশে ছড়িয়ে পড়বে। আমি আশা করছি ৫-৭-৫-৭ মাত্রাবিন্যাসে রচিত চার(৪) পঙ্ক্তির অণুকথনে গভীর ভাবনা ও চিত্রকল্পের শিল্পিত প্রকাশ ঘটেছে, যা ভবিষ্যতের অণুকথন রচয়িতাদের আরও উন্নত মানসম্পন্ন মর্মজ্ঞ ও যথার্থ শব্দ প্রয়োগে অণুকথন রচনায় অনুপ্রাণিত করবে।