অলকানন্দা কবিতায় অত্রিকা অলকানন্দা পাড়ের শ্মশানঘাটে পুড়ে ছাই হয়ে তার পবিত্র স্রোতধারায় ভেসে গেছে মাত্র কিছুদিন হলো। নিজের ক’জন ছাড়া এখন আর কেউই মনে রাখেনি তাকে। অথচও অনিন্দ্য সুন্দর অত্রিকা এই পৃথিবীতে ভালোলাগার কত জোড়া চোখের স্বপ্ন ছিলো একদিন। গভীর নিস্তব্ধতায় আমিও অত্রিকার পথের সঙ্গী হবো একদিন। কেউই মনে রাখবেনা তার মত। অথচ আমি বাঁচতে চাই অন্ততকাল। সৃষ্টির নিয়মে চাওয়াটা নিষ্ফল। যেতে হবে আমাকে, যেমন করে বহুকাল ধরে পূর্বরা গত হয়েছেন, আবার আগামীরাও যাবে ঠিক একই পথ ধরে। তবু আমি বাঁচতে চাই!
আমি কবিতার মানুষ। কবিতাকে লালন করি হৃদয় দিয়ে। আমাকে কেউ যদি প্রশ্ন করেন আপনি কবিতা কেন লিখেন? তখনই হাজার বছর বেঁচে থাকার ইচ্ছের কথাটা বলে দিই অকপটে। কারণ মানুষের মরণ হয়, কবিতার নয়! আর এই কবিতাই আমাকে বাঁচিয়ে রাখবে হৃদয়ে বিশ্বাস।
দীপান্বিতা
ভালোবাসার অন্তরালে ভালোবাসার গৌরচন্দ্রিকা
অনন্য ছোঁয়ায় হৃদপিণ্ডে নীল জোছনা হলে
অথৈ সময়ের শ্বাসে দ্রোহে মরা অনুভূতিগুলো
স্বপ্নের শঙ্খচিল হয়ে ডানা মেলে আমার আকাশ জুড়ে।
শিশির স্নানে তখন বিষণ্নতা বিসর্জন দিয়ে ছুটে যাই দূর্বাঘাসের মাঠে সূর্যের ঘ্রাণ নিতে।
এরপর ফুলকুড়ানি মেয়ে দীপান্বিতার বাড়ির মেঠোপথের পথিক হয়ে বাঁচতে ইচ্ছে হয় হাজার বছর।
মুখোশ
কাঁচা ফুলের বীভৎস বৃত্তান্ত পোস্টমর্টেমে
বৃত্ত ব্যাসার্ধ ছিঁড়ে ছিঁড়ে রক্তের ফোঁটায়-ফোঁটায় বিন্দু রেখাংশে সমান চতুষ্কোণ।
জলছাপের ছবি আঁকে শিল্পীরা,
দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার অলিগলিতে হাঁকডাক।
উত্তাল রাজপথ, ক্ষোভের মিছিল
অথচ প্রতিবাদী নিজেই একটা মুখোশ।
মাইলস্টোন এখন মিথিস্ক্রিয়া
ঘৃণার জমিতে অহোরাত্র অভিশাপ
নিশ্চুপ স্রোতে রক্তের কণায় কণায় ঝাঁকুনি;
জীর্ণবেদনে বিধ্বস্ত মন কালের কাছে প্রশ্ন রাখে অবিরত,
বিভীষিকাময় এই উপত্যকার আততায়ী মেঘ পরিশ্রান্ত বৃষ্টি হবে কবে?
মাইলস্টোন এখন মিথস্ক্রিয়া, নির্লজ্জের অভয়ারণ্যে বায়োস্কোপ উদ্যান।
অথচ প্রজন্মের পোড়া গন্ধে স্মৃতির শহরে বিষণ্ন হাহাকারে সন্ধ্যা নামে আজ।
নদী
ঊনিশের আপন ডুবে মরেছে, নদী; শান্তার চোখে অভিশপ্ত।
পূর্ণার্থীর স্নান তীর্থ, নদী; গঙ্গা রুপ।
জেলেপাড়া, বেদেপল্লী ভোরের আলোয় হাঁকডাক, নদী; বেঁচে থাকার স্বপ্ন।
গভীরতার উপলব্ধি, নদী; প্রেমিকের চোখ।
চাঁদ-সূর্যের মাখামাখি, নদী; শিল্পীর রংতুলি।
জোয়ার-ভাটায় ঘোলাটে জল, নদী; জাতের উদাহরণ।
নদী; একটি সারমর্ম কবিতা!