কবি ও কথাসাহিত্যিক সালাম তাসির দীর্ঘ সময় নিয়ে কবিতার জগতে বিচরণ করছেন। তাঁর কবিতায় প্রেম-ই উপজীব্য বিষয় হিসেবে প্রাধান্য পেয়ে থাকে। তিনি তাঁর সমসাময়িক কবিদের মধ্যে ইতোমধ্যেই নিজেকে একটি শক্ত আসনে উপনীত করতে পেরেছেন।
তাঁর কবিতায় উচ্চমার্গীয় দর্শন, মেদসর্বস্ব অতিকথন কিংবা বাচনভঙ্গিও স্থুলতা স্থান পায় না। সহজ সরল ভঙ্গিমায় এক অনিন্দ্য আয়োজন থাকে কবিতার শরীর জুড়ে। সহজিয়া অনুভূতিতে পাঠককে টানে, আন্দোলিত করে। এ ছাড়া তাঁর কবিতার ভেতর দিয়ে জীবনানন্দীয় সুরের একটা অনুরণন প্রতিধ্বনি তোলে।
‘পৃথিবীর দুহাতে প্রার্থনার গোলাপ’ তাঁর কবিতাগ্রন্থের মধ্যে এক অনন্য সংযোজন। ইতোমধ্যে এই কবির একক, সম্পাদিত সবমিলে কবিতা-গল্প নিয়ে ১৬টি গ্রন্থ বেরিয়েছে। অধিকাংশ গ্রন্থ-ই আমার পাঠ করবার সুযোগ হয়েছে। কবিবন্ধুর কবিতা আমাকে মুগ্ধ করে, পাঠে নিবিষ্ট করে। এই কবিতাগ্রন্থের নাম শিরোনামীয় কবিতার অংশবিশেষ পাঠ করলে জানতে পারবো কবি কতটা প্রেমাতুর, প্রেমাসক্ত আবেগে চুর হয়ে আছেন।
বধির মেঘ অন্ধ আবেগে প্রেমাসক্ত হলে/ তোমার চিবুক ছুঁয়ে নেমে আসে বৃষ্টির জল/ পৃথিবীর দুহাতে প্রার্থনার গোলাপ/ প্রণতি জানায় ঈশ্বরকে অতঃপর/ প্রয়োজনহীন নক্ষত্রগুলো ঝরে পড়ে তিলোত্তমা শহরে/অথচ তুমি এখন প্রিয় শহর ছেড়ে আলোকবর্ষ দূরে।...
আবার তিনি বলছেন—
এখনো প্রিয়জনের স্নানঘরে জমা হয় আসক্তির জল/ প্রণয়ের উনুনে নিরুত্তাপ আগুন উষ্ণতা দেয়/ আমার নিদ্রাহীন চোখে জলমগ্ন সুহাসিনী চাঁদ/ ভালোবাসার আড়ালে ভালোবাসা হয়ে থাক আধেক জীবন।/ যদি কখনো পৃথিবী নিদ্রাহীন হয় আমরা ডুব সাঁতারে/জল-জোছনার মিলনসঙ্গী হবো বাকীটা জীবন।
আমরাও কবির সাথে থেকে জল-জোছনার মিলন সঙ্গী হতে চাই।