কবিতা হলো মানুষের অন্তর্জগতের মধুরসসিক্ত শব্দচয়ন। কবিতা কখনো ভোরের শিশিরবিন্দুর মতো নির্মল, আবার কখনো রুদ্র ঝড়ের মতো তীব্র ও প্রতিবাদী। জীবন, সমাজ ও বৈশ্বিক অভিজ্ঞতাকে শব্দের শৈল্পিক বুননে রূপ দেওয়ার নামই কবিতা, যা পাঠকের হৃদয়ে আবেগ জাগায় এবং চিন্তার দ্বার উন্মোচন করে।
আমি সেই ছোটবেলা থেকেই সাহিত্যপ্রেমে আচ্ছন্ন আছি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করে আইনপেশায় যুক্ত হলেও কবিতার প্রতি আমার মমত্ববোধ কখনো ম্লান হয়নি। আমার কলমে সমাজের, দেশের ও নিপীড়িত বিশ্বের অন্যায়-অবিচার, ইতিহাসের গৌরব ও লজ্জা, প্রেম-বিরহের গভীরতা , দাসত্ব ও সাম্রাজ্যবাদ এবং মানবিক বেদনা কাব্যভাষায় নির্মাণ করার চেষ্টা করেছি।
এ পর্যন্ত আমার আটটিরও বেশি স্বতন্ত্র কাব্যগ্রন্থ, একটি প্রবন্ধ গ্রন্থ, চৌদ্দটি যৌথ কাব্যগ্রন্থ এবং একটি গল্পগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। দেশি-বিদেশি নানা সাময়িকী ও সাহিত্যপত্রে প্রকাশিত তিন শতাধিক কবিতা পাঠকসমাজকে সমকালীন সাহিত্যচর্চার নতুন আলো দেখিয়েছে।
বসন্তঋতুর তৃতীয় মাস কবিতাগ্রন্থ আমার নবম কাব্যগ্রন্থ। এ গ্রন্থের প্রতিটি কবিতা যেন বসন্তের রঙিন ডানার মতো কোথাও কোমল প্রেমের আভা, কোথাও সামাজিক সংকটের কষাঘাত, বৈশ্বিক দাসত্ববাদ ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ, আবার কোথাও মানবমনের অন্তর্লীন বিষণ্নতার সুর। এই বৈচিত্র্যের ভেতর দিয়েই আমি পাঠককে এক অনন্য কাব্যযাত্রায় নিয়ে যেতে চেয়েছি।
বসন্তঋতুর তৃতীয় মাস নিছক একটি কবিতাগ্রন্থ নয়, বরং এক জীবন্ত অভিজ্ঞতা, যা পাঠকের অন্তরে দীর্ঘকাল অনুরণিত হবে। এই কবিতাগ্রন্থে আমি অনেক নতুন শব্দ ব্যবহার করেছি, যা আমার একান্ত নিজস্ব সৃষ্টি। বইটি পড়ে পাঠক ভাবনা জাগ্রত হলে নিজেকে ধন্য মনে করব।