স্বামী আতাউরের গোপন প্রেম, এক বিবাহিত নারীর সাথে লুকোচুরি — সবটাই ফারাহর নখদর্পণে। অন্যদিকে, আতাউর নির্বিকার। সে জানে না, তার নীরব অভিনয়, দিনের পর দিন মিথ্যা বলে যাওয়াটা তার স্ত্রী ধরে ফেলেছে। এত কিছু জেনেও ফারাহ চুপ হয়ে আছে। না জানার ভান করে সংসার জীবন চালিয়ে যাচ্ছে আশ্চর্য দক্ষতায়।
তার এই নীরবতার পেছনে লুকিয়ে আছে এক দ্বৈত-সংঘাত।
প্রথমত, এই মর্মভেদী বিশ্বাসঘাতকতা নিয়ে কীভাবে সে আতাউরের মুখোমুখি হবে? ব্যাপারটা মনে পড়লেই ক্রোধে তার শরীর অসাড় হয়ে আসে, ঘৃণায় গা গুলিয়ে ওঠে। দ্বিতীয়ত, গভীর ভালোবাসার টানে ফারাহ তার প্রাণপ্রিয় স্বামীকে শেষ একটা সুযোগ দিতে চায়। এমন একটা ভুলের জন্য সম্পর্ক ছিন্ন হোক, সে চায় না। ফারাহ দেখতে চায়, আতাউর নিজের ইচ্ছায় আবার তার কাছে ফিরে আসে কিনা।
এটি আতাউরের জন্য সুযোগ, আবার ফাঁদও বটে। যদি সে ফিরে আসে, তো ভালো। আর যদি না ফেরে? ফারাহর মনে এক ভয়াবহ শাস্তির পরিকল্পনা দানা বাঁধতে থাকে- সেই শাস্তির রূপ কেমন হবে, তা ফারাহ নিজেও জানে না।
হঠাৎ একদিন আতাউর প্রস্তাব দেয়— ঢাকার কোলাহল ছেড়ে চায়ের শহর শ্রীমঙ্গলে বসতি গড়ার। ঢাকার এই ব্যস্ত জীবন নাকি আর ভালো লাগছে না। ফারাহ ঢাকা ছাড়ার কথা জীবনেও ভাবেনি। তবু মুহূর্তেই রাজি হয়ে যায় আতাউরের প্রস্তাবে।
কারণ ফারাহ জানে, 'ব্যস্ততা' একটা অযুহাত মাত্র। আতাউর শ্রীমঙ্গল যেতে চায়, কারণ তার প্রেমিকা শিউলি এখন সেখানেই থাকে।
খেলাটা তবে শ্রীমঙ্গলেই শুরু হোক।
ফারাহ তৈরি। শ্রীমঙ্গলের সবুজ শান্ত পরিবেশে শুরু হবে এক ভয়ংকর খেলা।
এ খেলায় কে হবে শিকার? কে শিকারী?
টিউশনি, হেল্পিং হ্যান্ড, প্রবেশ নিষেধ আর প্রাক্তনের পর কয়েস সামীর আরেকটা শ্বাসরুদ্ধকর সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার— দ্য গেইম!
কয়েস সামী। ছেলেবেলা থেকেই বইয়ের সাথে তার নিবিড় বন্ধুত্ব। সাহিত্যকে ভালোবেসে পড়েছেন সিলেটের এমসি কলেজের ইংরেজিতে। পড়তে পড়তে লেখালেখিতে ঝুঁকে পড়েন একসময়। আনন্দ খুঁজে পান গল্প বলায়। সহজ সরল ভাষায় গল্প বলাতেই পছন্দ করেন বেশি। তার লেখা লাকি থার্টিন গল্পগ্রন্থটি দেশ পান্ডুলিপি পুরস্কার অর্জন করে নেয় ২০১৯ সালে। অন্যান্য বইগুলির মধ্যে রয়েছে- ঝরিছে নয়নবারি, পেনসিল ভূত, মোটুপাতলুর বন্ধু সাফওয়ান। পেশায় ব্যাংকার হওয়ায় লেখালেখির জন্য সময় খুঁজে বের করা কষ্টকর হয়ে পড়ে অনেক সময়। তবু তিনি সময় বের করে নেন- নেশার টানে, ভালোবাসার টানে।