ইসলাম শুধুই কোনো ধর্ম নয়—এটি এমন এক জীবনবিধান, যা জীবনের প্রতিটি পরতে পরতে রেখেছে পরিপূর্ণ গাইডলাইন। এই বিধানের অন্যতম, অনন্য ও মর্যাদাবান অংশ হলো নারীর পর্দা। পর্দা কেবল কাপড় পরিধান নয়; এটি নারীকে করে তোলে সুরক্ষিত, সম্মানিত ও স্বাতন্ত্র্যপূর্ণ। এটি তার আত্মমর্যাদা, তার নিরাপত্তা এবং তার পরিচয়ের গৌরবময় ঢাল। আলোকমাল্য সাজানো একটি সমাজ তখনই সৌন্দর্যমণ্ডিত হয়, যখন তার নারীরা হন শালীনতায় পরিপূর্ণ ও সংরক্ষিত। কিন্তু আজ, তথাকথিত প্রগতিশীলতার স্রোতে সেই শালীনতা যেন বিলীন হতে বসেছে। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে উদ্ভিন্ন হচ্ছে অনাচার, অপসংস্কৃতি ও চরিত্রহীনতার বিষবাষ্প। এমতাবস্থায় সত্যনিষ্ঠ মুসলিম হিসেবে আমাদের দায়িত্ব—নিজ ঘর, পরিবার ও সমাজকে ইসলামের বিশুদ্ধ শিক্ষায় গড়ে তোলা। আর সে পথে এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো নারীর পর্দা।
এমন এক প্রেক্ষাপটে এই গ্রন্থটির প্রকাশ নিঃসন্দেহে সময়োপযোগী ও প্রশংসনীয় প্রয়াস। এটি মূলত গুরুত্বপূর্ণ একটি আরবি গ্রন্থের অনুবাদ, যা হৃদয়গ্রাহী ভাষায় 'ও সরল শৈলিতে উপস্থাপন করেছেন মিজানুর রহমান ফকির। এই অনুবাদে কেবল শব্দান্তর করেননি—তিনি হৃদয়ের ভাষায় ফুটিয়ে তুলেছেন পর্দার প্রকৃত আবেদন, ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি, শরঈ বিধান ও সমাজ বাস্তবতায় এর অপরিহার্যতা।
সম্মানিত পাঠক! এই ক্ষুদ্র অথচ গভীর অন্তর্দৃষ্টি-সম্পন্ন গ্রন্থে আপনি দেখতে পাবেন পর্দা সংক্রান্ত কুরআন-হাদীসের নির্দেশনা, নবীজির যুগের উজ্জ্বল আদর্শ, সাহাবায়ে কেরামের জীবনচিত্র এবং আমাদের সময়ের সমাজ বাস্তবতার বিশ্লেষণ। এটি শুধুমাত্র একটি জ্ঞানভিত্তিক রচনা নয়, বরং একটি আন্তরিক আহ্বান – হৃদয়ের দরজায় প্রেরিত এক পরিশুদ্ধ ডাক, যাতে আমরা পর্দার অন্তর্নিহিত অর্থ অনুধাবন করে তা জীবন ও সমাজে বাস্তবায়ন করতে পারি।
এই গ্রন্থ পাঠকের চিন্তার জগতে সৃষ্টি করবে এক নীরব আলোড়ন। পথহারা মন ফিরে পাবে দিকদর্শন এবং সমাজে গড়ে উঠবে পরিশীলিত, নিরাপদ ও ঈমানদীপ্ত পরিবেশ ইনশা-আল্লাহ।