সতেরো বছরের একটি মেয়ে, যে বেড়ে উঠেছিল অজ্ঞ, কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস ও ধর্মীয় গোঁড়ামিতে ভরপুর এক প্রত্যন্ত গ্রামে। ছোটবেলায় এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার রেশ ধরে চঞ্চল স্বভাবের মেয়েটা ভয়, ঘৃণা ও লজ্জার মিশেলে হয়ে ওঠে অন্তর্মুখী, নির্বোধ এবং ভীতু স্বভাবের। যে কখনো কারো সাথে উচ্চবাচ্য করার সাহস করে না, কাউকে কখনো ভুল বোঝে না, যার মন ও মস্তিষ্কে মন্দ বলে কিছুই নেই।
প্রাণহীন সেই কিশোরীর জীবনে অপ্রত্যাশিত ভাবে আগমন ঘটে আরিশ জুহায়ের-এর। এই চতুর, রগচটা, তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন পুলিশ অফিসার নিজ হাতে গড়ে তোলে মেয়েটিকে। আবেগী, আত্মমর্যাদাহীন রায়ানাকে ভালোবেসে করে তোলে সাহসী, উদ্যমী এবং স্বনির্ভরশীল। জীবনের চরম উত্থান-পতনে মেয়েটির রক্ষাকবচ হয়ে ওঠে আরিশ। আদর, যত্ন ও শাসনে মেয়েটির দুর্বলতা গুলোকে উড়িয়ে দেয় হাওয়ায়।
গ্রামীণ জীবনের প্রেক্ষাপটে দুই মেরুর দুজন মানুষের নির্মল, স্নিগ্ধ প্রেমে গড়ে উঠেছে একটি গল্প। যে গল্পে রয়েছে অবাধ প্রেম, দ্বন্দ্ব, আতঙ্ক, প্রতিশোধ পরায়নতা, ও সমাজের নানাবিধ অন্তরায়। এ কাহিনীর প্রতিটি অধ্যায়ে লুকিয়ে আছে লোভ, পাপ, ইর্ষা। মানবিকতার মুখোশ ছিঁড়ে এ কাহিনীতে উঁকি দেয় নিকৃষ্টতম স্বার্থপরতা।
এটি এক কিশোরীর পরিপূর্ণ নারী হয়ে ওঠার গল্প। ভুল করে ভালোবেসে, সুখময় সংসার আর খুনসুটিতে মেতে ওঠার গল্প।
তবে প্রশ্ন থেকে যায়,
এ গল্পের কী শেষ আছে? রায়ানা শেষ পর্যন্ত তার সুখ টিকিয়ে রাখতে পারে, নিজের চাওয়া-পাওয়া, অধিকার গুলোকে কি ছিনিয়ে নিতে পারে? নাকি অপ্রত্যাশিত এক সত্য সামনে এসে নড়বড়ে করে তোলে তার ব্যক্তিসত্তা, তার পরিচয়? সমাজের কুটনৈতিক চালে কি ঝলসে ওঠে জীবন?