যারা আদতে মধ্যবিত্ত না অথচ নিজেদেরকে মধ্যবিত্ত ভেবে, মধ্যবিত্তদের মতো করে জীবন নির্বাহ করতে গিয়ে, সারাজীবন অর্থনৈতিক মুক্তির ধারে কাছে তো যেতেই পারি না, উল্টো একট ভয়াবহ টানাপোড়েনের মধ্য দিয়েই জীবন অতিবাহিত করতে হয়।
মধ্যবিত্তদের জীবনে এমন কিছু সময় আসতে পারে, যে তারা অনেক সময় নিজের জন্য কিছু সিদ্ধান্ত নিতে চান, যেটা হয়ত শুধু তারই ভালোর জন্য। যার জন্য সে হয়ত বহু বছর অপেক্ষা করেছে। কিন্তু যখনই সিদ্ধান্তটা নেওয়ার সময় হয়ে এসেছে, তখন সিদ্ধান্তটা নিতে পারে না। কারণ এই সিদ্ধান্তটা নিলে হয়ত শুধু সে ভালো থাকবে, কিন্তু বাকীরা? তাদের কি হবে, যারা তার উপর নির্ভরশীল, এইসব ভেবে একজন মধ্যবিত্ত নিজের মতো করে বাঁচার অধিকার হারায়।
একটা মধ্যবিত্ত ঘরের একমাত্র আয় উৎসারী মানুষ চাইলেও নিজের জন্য আর বাঁচতে পারে না। জীবনের মধ্য সময়ে এসে হয়ত একজন ভাবতে শুরু করলো, বয়সটা তো শেষ হতে চলল, এ জীবন যদি একটাই হয়, তাহলে তো সেটা ফুরাতে চলল, নিজের মতো বাঁচবো কবে?
যখন ভাববেন নিজের মতো করে বাঁচার এইতো সময়, কিন্তু যখনই সিদ্ধান্ত নিতে যাবেন, তখনই আপনার স্ত্রী-সন্তান, বাবা-মা, ভাইবোন সবাই যারা আপনার উপর নির্ভরশীল, তাদের কথা মনে পড়ে যাবে। মধ্যবিত্ত হয়ে জন্মগ্রহণ অনেকটা পূর্বজন্মের পাপের ফলের মতো মনে হয়, আমার কাছে। একজন মধ্যবিত্তের নিজের জন্য বাঁচার অধিকার থাকে না।
মধ্যবিত্তের এই জীবনচক্রে আমি আসলে মধ্যবিত্তদের সমস্যা, প্রতিনিয়ত করা ভুলগুলো নিয়ে এই বইতে আলোচনা করা হয়েছে। বোকা লোকদের মধ্যবিত্ত ভাবনায় একটা ধাক্কা দেয়ার চেষ্টা করেছি, এই লেখার মাধ্যমে।