“অফিসে নেকড়ে যাদের মনে হয়—আসলে তারা নয়। আসল নেকড়ে থাকে নিজের ভেতর।”
বাইরে থেকে তাকালে মনে হয় আকাশছোঁয়া এক কাচের প্রাসাদ। ঝকঝকে ফ্লোর, হাড়হিম করা এসি, আর পরিপাটি পোশাকের স্মার্ট মানুষ। কিন্তু কাচের দরজার ওপাশে পা রাখলেই বোঝা যায়—এটি আসলে এক আধুনিক জঙ্গল। এখানে গাছের আড়ালে বাঘ থাকে না, থাকে ফাইলের আড়ালে ষড়যন্ত্র। এখানে শিকার ধরার জন্য নখ বা দাঁত লাগে না, লাগে মিষ্টি হাসি আর কূটকৌশল।
গল্পের নায়ক ইশতিয়াক রহমান—মধ্যবিত্ত পরিবারের এক স্বপ্নবাজ তরুণ। যোগ্যতা আর সততাকে পুঁজি করে সে প্রবেশ করে ‘কর্পোরেট হাইভ’-এ। কিন্তু খুব দ্রুতই তার ভুল ভাঙে। সে আবিষ্কার করে, এই অফিসের ‘আলফা উলফ’ বা নেকড়ে-সর্দার মিরাজ আহমেদ-এর রাজত্বে টিকে থাকার নিয়ম একটাই—‘শিকার করো, অথবা শিকার হও’।
টিকে থাকার লড়াইয়ে ইশতিয়াক কি পারবে নিজের সততা ধরে রাখতে? নাকি পরিস্থিতির চাপে সে নিজেই পরিণত হবে এক ধূর্ত নেকড়েতে? সাজ্জাদ, মানসুর ভাই, কিংবা শবনম আপার মতো চরিত্ররা কি তাকে পথ দেখাবে, নাকি ঠেলে দেবে অন্ধকারের দিকে?
‘নেকড়ের অফিস’ নিছক কোনো গল্প নয়; এটি বিবেক বনাম উচ্চাকাঙ্ক্ষার এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের দলিল। এটি আপনাকে শেখাবে কর্পোরেট রাজনীতির অলিগলি, মুখোশপরা মানুষদের চেনার উপায় এবং দিনশেষে নিজের মনুষ্যত্ব টিকিয়ে রাখার কৌশল।
কেন পড়বেন এই বই?
💼 বাস্তবতার দর্পণ: যারা কর্পোরেট জগত বা অফিসে কাজ করেন, তারা প্রতি পাতায় নিজের জীবনের ছায়া খুঁজে পাবেন।
🧠 মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব: পদোন্নতির লোভে মানুষ কতটা নিচে নামতে পারে এবং বিবেকের দংশন তাকে কীভাবে কুড়ে কুড়ে খায়—তার এক নিপুণ আখ্যান।
🛡️ সারভাইভাল গাইড: অফিস পলিটিক্স মোকাবিলা করে কীভাবে নিজের অবস্থান শক্ত করতে হয়, গল্পে গল্পে মিলবে তার পাঠ।
🔥 রোমাঞ্চকর কাহিনি: টানটান উত্তেজনায় ভরপুর এই উপন্যাসটি শুরু করলে শেষ না করে উঠতে পারবেন না।
প্রযুক্তি আর প্রজ্ঞার নিবিড় মেলবন্ধনে গড়া নাম ওয়াহিদুর রহমান, যিনি ডিজিটাল ভুবনে ‘ফ্রিল্যান্সার ওয়াহিদ’ নামে সমধিক পরিচিত। নব্বইয়ের দশকের শেষলগ্নে নোয়াখালীর স্নিগ্ধ আবহে জন্ম নেওয়া এই স্বপ্নদ্রষ্টা বর্তমানে ঢাকার বাসিন্দা হলেও, তাঁর মননে মিশে আছে শেকড়ের ঘ্রাণ। ইতিহাসের ছাত্র হিসেবে তিনি যেমন অতীতকে দেখার চোখ রাখেন, তেমনি ব্যবসায় প্রশাসনের গবেষক হিসেবে বুনতে জানেন আগামীর স্বপ্ন। যুক্তরাজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্র—আন্তর্জাতিক কর্মপরিধিতে বিচরণ থাকলেও তাঁর শেকড় প্রোথিত বাংলা সাহিত্যে। এলসেভিয়ারের মতো বিশ্বখ্যাত জার্নালের রিভিউয়ার কিংবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে গবেষণা—সবখানেই তিনি রেখেছেন মেধার স্বাক্ষর।
তাঁর লেখনী তরুণদের দেখায় স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন ও আত্মজাগরণের মন্ত্র। ‘জীবনের জ্যামিতি’ কিংবা ‘প্রজ্ঞার পাঠশালা’-য় তিনি যেমন জীবনের সমীকরণ মিলিয়েছেন, তেমনি ‘আমি হবো ফ্রিল্যান্সার’ ও ‘নিজেকে জাগাও’ বই দিয়ে দেখিয়েছেন আলোর পথ। প্রযুক্তিগত দক্ষতা আর সৃজনশীলতার মিশেলে তিনি তাঁর পাঠকের জন্য তৈরি করেন এমন এক জগত, যা কেবল তথ্য দেয় না—বরং ভাবায় ও স্বপ্ন দেখায়।