কোন বিশেষণে ফয়জুন্নেসা বেগমকে ভূষিত করা যায়Ñসিদ্ধান্ত নেওয়া বেশ কঠিন। তিনি সারা জীবন নিজের সামান্য যা কিছু ছিল তা থেকেই যতটা সম্ভব হাসিমুখে দান করে গেছেনÑখাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষাসামগ্রী; যখন যার যেমন প্রয়োজন। রত্নগর্ভা ফয়জুন্নেসা ছিলেন একজন পরোপকারী মানবদরদী অসাধারণ মানুষ। তাকে অসাধারণ এই জন্য বলা যায় যে, অনেকেই বলতেন, ‘তাঁর মতো ভালো মানুষ খুবই কম হয়।’ অনেকেই বলতেন, ‘এমন মানুষ আর পাওয়া যাবে না’!’ আমার মেজো চাচী বলতেন, ‘হের মতো ভালা মানুষ আমার জীবনে আর একটাও পাই নাই।’ ছোট দাদী বলতেন, ‘এই বউটা একটা ভালো মানুষের বাচ্চা।’ তার পরিসর ছিল ছোট ৫ গ্রাম কিংবা ১০ গ্রাম কিন্তু ভূমিকা ছিল অনেক বড়ো। স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা দিয়ে ছোট পরিসরে রেখেছেন বড়ো ভূমিকা। তাঁর আদর্শ—মাহন আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস এবং আল্লাহ্র উপর ভরসা। বিশ্বাস করতেন ‘জীবে দয়া করে যেইজন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর।’ অর্থাৎ মানুষের সেবা করে মহান আল্লার সন্তুষ্টি লাভ করা যায়। পড়তেন পবিত্র কোরআন শরিফ ও ধর্মীয় গ্রন্থ। শুনতেন নজরুল সঙ্গীত, হামদ ও নাত এবং কিছু নাটক। টেলিভিশনে দেখতেন খবর।
শখ: গাছ লাগানো আর মানুষকে খাওয়ানো।
স্বপ্ন: তার স্বপ্ন ছিল ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র—মুক্ত সুশিক্ষিত মানুষের বাংলাদেশ।
ভালবাসতেন: তার সন্তান, আত্মীয়—স্বজন, প্রতিবেশী, গ্রামবাসী, এলাকাবাসী, ধনী, দরীদ্র নির্বিশেষে সকল মানুষকে।
আদর্শ ব্যক্তিত্ব: তার আদর্শ ব্যক্তিত্ব ছিলেন বেগম রোকেয়া, তার মা চান বানু বিবি এবং তার স্বামী মোঃ মজিবুর রহমান ভূইঁয়া।
কৃতজ্ঞতা: তার শাশুড়ির নিকট তিনি কৃতজ্ঞ ছিলেন, যিনি তাকে হারবাল চিকিৎসা বিদ্যা শিখিয়েছেন।
অর্জন: অসংখ্য মানুষের ভালবাসা, সম্মান আর দোয়া।
২০২১ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারী এই মহীয়সী নারী ইহলোক ত্যাগ করেন।