বই পরিচিতি: পৃথিবী বদলে গেছে, যা দেখি নতুন লাগে! প্রকৃতি, পরিবেশ, জলবায়ু - সবই বদলে গেছে। বদলে গেছে মানুষও! এ শতকের যুগান্তকারী আবিষ্কার এলিয়েন হরমোন বা এলিমোন মানুষে এনেছে অকল্পনীয় পরিবর্তন। চারদিকে শিং-লেজ-পাখাওয়ালা মানুষ! এমনকি মানুষ হয়ে যাচ্ছে মাছের মতো বা গাছের মতো! এই পৃথিবীতেই হঠাৎ শুরু হলো অজ্ঞাতদের আক্রমণ। শুরু হলো বিশৃঙ্খলা। কেউ জানে না এর শেষ কোথায়। সবকিছুরই তো শেষ আছে; হয়তো এরও শেষ আছে!
লেখক পরিচিতি: বিজ্ঞানের প্রতি আসিফ মেহ্দীর সীমাহীন আগ্রহ। এতটাই যে ছাত্রজীবনে বিজ্ঞানবিষয়ক পাঠ্যবইও নাকি তাঁর ভালো লাগত! সেই ভালোবাসার জোরেই কি না কে জানে, এসএসসি ও এইচএসসি দুই পরীক্ষাতেই ঢাকা বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে তিনি স্ট্যান্ড করে বসেন। সাহিত্যের প্রতি ঝোঁক ছাত্রজীবন থেকেই। তবে সাহিত্যের সঙ্গে বিজ্ঞানকে মিশিয়ে বিজ্ঞান কল্পকাহিনি লিখতেই তিনি বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। সাহিত্যের এই শাখায় নিজের দক্ষতার জানান দেন তাঁর লেখা সায়েন্স ফিকশন ‘ফ্রিয়ন’ এবং ‘হিগস প্রলয়’-এর মাধ্যমে। দুটি বই-ই পাঠক সমাদৃত হয়েছে।
দেশসেরা দুই ফান ম্যাগাজিন ‘উন্মাদ’ ও ‘রস আলো’তে লেখার সুবাদে রম্যলেখক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন আগেই। প্রথম প্রকাশিত বই ‘বেতাল রম্য’ তাই হয়েছিল ব্যাপক জনপ্রিয়। বিভিন্ন সময়ে লেখা ছোট ছোট ছড়া নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে ‘ন্যানো কাব্য’ ও ‘ন্যানো প্রহর’। জীবনঘনিষ্ঠ উপন্যাস ‘অপ্সরা’ দিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছেন ঔপন্যাসিক হিসেবে। সাম্প্রতিক সময়ে লিখছেন দেশসেরা কিশোর ম্যাগাজিন ‘কিশোর আলো’তে।
বুয়েট-এ ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। ৩৩ তম বিসিএস পরীক্ষায় নিজ ক্যাডারে ১ম স্থান অধিকার করে বর্তমানে বাংলাদেশ বেতারের গবেষণা ও গ্রহণ কেন্দ্রে সহকারী বেতার প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আসিফ মেহ্দীর বইগুলো সম্পর্কে আরও বিস্তারিত পাবেন তাঁর ওয়েবসাইটে : Asif Mehdi
বইটির উৎসর্গপত্র: এই সমাজে মানুষ বয়স বাড়ার সাথেসাথে পরিবর্তনের পথে হাঁটার দুঃসাহস হারিয়ে ফেলে। তাঁরা দুজন হারাননি। তাঁদের নিরন্তর এগিয়ে চলায় দেশ পেয়েছে ভিন্ন ধাঁচের রকমারি উদ্যোগ! অন্যরকম স্বদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেন তাঁরা। অন্যরকম আগামী থাকে এমন মানুষদেরই প্রতীক্ষায়। শুভকামনা সেই দুঃসাহসী দুজন অভিযাত্রিকের জন্য - মাহমুদুল হাসান সোহাগ আবুল হাসান লিটন
ভূমিকা (লেখকের কথা): বিজ্ঞানে ‘এনট্রপি’ বলে একটি টার্ম আছে। বিশৃঙ্খলার পরিমাপই এনট্রপি। জেনেছি, মহাবিশ্বের সবকিছুই শৃঙ্খলা থেকে বিশৃঙ্খলার দিকে যাচ্ছে। এটি জেনে মোটেও অবাক হইনি। কারণ এর সত্যতা চতুর্পাশেই দৃশ্যমান। ভাবলাম, সব জায়গায় যেহেতু আছে, সায়েন্স ফিকশনেও একটু বিশৃঙ্খলা নিয়ে আসলে ক্ষতি কী! সেই চিন্তা থেকে এল মনে এলিমোন-এর আইডিয়া। লেখার কাজটি ঠিকভাবে করতে পেরেছি কিনা, এখনো জানি না। সায়েন্স-এর সংজ্ঞানুযায়ী, বল যতই প্রয়োগ করা হোক, সরণ ছাড়া কোনো কাজ হয় না! তেমনি লেখকের ভাবের বল যতই হোক না কেন, তা যদি পাঠকের মনকে নাড়াতে না পারে, তাহলে লেখার কাজটি ঠিকভাবে হয়েছে বলা যাবে না। তাই আপনাদের ফিডব্যাকের প্রত্যাশায় দিন গুনে যাব। ফেসবুকের যুগ। আশাকরি, কেমন লাগল জানাবেন। - আসিফ মেহ্দী চামেলী কটেজ বসন্তপুর, ঝিনাইদহ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
সাহিত্যের প্রতি আসিফ মেহ্দীর ঝোঁক ছাত্রজীবন থেকেই। দেশসেরা দুই ফান ম্যাগাজিন উন্মাদ ও `রস+আলো`তে লেখার সুবাদে আসিফ মেহ্দী পেয়েছেন তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তা। ব্যঙ্গ আর হাস্যরসের সঙ্গে গভীর জীবনবোধের প্রতিফলন রয়েছে তাঁর কাহিনিগুলোতে। ৪র্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানের বেগ ও মানবিক আবেগের সমন্বয়ে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নানা উপকরণ আছে তাঁর লেখা কল্পবিজ্ঞান ও বিজ্ঞান বিষয়ক বইগুলোতে। বেস্ট সেলারের তালিকায় রয়েছে মায়া, বধির নিরবধি, অপ্সরা, তরু-নৃ, অদ্রির অভিযান, আড়াল। এখন তিনি লিখছেন কিশোর আলো, বিজ্ঞানচিন্তা ও `বিজ্ঞান আনন্দ`তে। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ছত্রিশ। অর্জন করেছেন ঢাকা ব্যাংক-আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার, আর্টলিট সেরা বই পুরস্কার, ডিজি অ্যাওয়ার্ড, শ্রেষ্ঠ উপস্থাপক অ্যাওয়ার্ড, বিমানবাহিনী প্রধানের শ্রেষ্ঠ মেধা ট্রফি, অ্যাওয়ার্ড ফর এক্সিলেন্সসহ নানাবিধ পদক ও সম্মাননা। তিনি বর্তমানে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষণারত। এসএসসি ও এইচএসসিতে বোর্ড-স্ট্যান্ড এবং গ্রাজুয়েশন করেছেন বুয়েটে। যুক্তরাজ্যের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্পন্ন করেছেন এমএসসি। আসিফ মেহ্দী বাংলাদেশ বেতারের উপ-স্টেশন প্রকৌশলী। তাঁর সহধর্মিণী মৌবীণা জ্যাকলিন বারি পেশায় ডাক্তার।