হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সিরাত ও জীবনী (67 Products)

By: MD samiul ali 14 Dec 2025

হযরত মুহাম্মদ ﷺ ইসলামের সর্বশেষ নবী ও রাসূল। তিনি ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে আরবের মক্কা নগরীতে কুরাইশ গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা আবদুল্লাহ জন্মের আগেই ইন্তেকাল করেন এবং মাতা আমিনা ছয় বছর বয়সে ইন্তেকাল করলে তিনি এতিম হয়ে পড়েন। দাদা আবদুল মুত্তালিব ও পরে চাচা আবু তালিবের তত্ত্বাবধানে তিনি বড় হন। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন সত্যবাদী, বিশ্বস্ত ও চরিত্রে অনন্য—এ কারণেই মক্কার মানুষ তাঁকে “আল-আমিন” নামে ডাকত। যৌবনকালে তিনি ব্যবসার সাথে জড়িত হন এবং সততা ও ন্যায়পরায়ণতার জন্য সবার আস্থা অর্জন করেন। খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহা তাঁর সততায় মুগ্ধ হয়ে তাঁকে বিয়ে করেন। এই দাম্পত্য জীবন ছিল শান্তি, ভালোবাসা ও পারস্পরিক সম্মানের দৃষ্টান্ত। সমাজের অন্যায়, জুলুম ও মূর্তিপূজায় তিনি কখনো সন্তুষ্ট ছিলেন না—সবসময় সত্যের খোঁজে থাকতেন। ৪০ বছর বয়সে হেরা গুহায় ধ্যানরত অবস্থায় তাঁর ওপর প্রথম ওহি নাজিল হয়। আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে জিবরাইল (আ.) এর মাধ্যমে তাঁকে নবুয়ত দান করা হয়। এরপর শুরু হয় ইসলামের দাওয়াত—এক আল্লাহর ইবাদত, ন্যায়বিচার, মানবিকতা ও নৈতিকতার শিক্ষা। কিন্তু সত্য বলার মূল্য দিতে হয়—মক্কার কাফেররা তাঁকে ও তাঁর অনুসারীদের ওপর চরম নির্যাতন চালায়। এই অত্যাচারের কারণে তিনি মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন, যা ইসলামের ইতিহাসে এক টার্নিং পয়েন্ট। মদিনায় তিনি একটি আদর্শ ইসলামী সমাজ গঠন করেন—যেখানে মুসলিম ও অমুসলিম সবার অধিকার নিশ্চিত করা হয়। তিনি ছিলেন একজন রাষ্ট্রনায়ক, সেনাপতি, বিচারক ও শিক্ষক—কিন্তু সবকিছুর ঊর্ধ্বে একজন দয়ালু মানুষ। শত্রুকেও ক্ষমা করার মানসিকতা তাঁর চরিত্রের সবচেয়ে শক্ত দিক। ৬৩ বছর বয়সে তিনি ইন্তেকাল করেন, কিন্তু তাঁর রেখে যাওয়া আদর্শ আজও জীবন্ত। সততা, ধৈর্য, ক্ষমা, ইনসাফ ও মানবতার যে মানদণ্ড তিনি স্থাপন করেছেন—তা শুধু মুসলমানদের জন্য নয়, পুরো মানবজাতির জন্য পথনির্দেশনা। বাস্তব কথা হলো, সিরাত শুধু পড়ার বিষয় না—অনুসরণ করার বিষয়। এখানেই তাঁর জীবনের আসল প্রভাব।

  • Sort By:

Recently Viewed