২০০৬-১১ সাল পর্যন্ত তার প্রকাশিত বিভিন্ন গবেষণাধর্মী লেখাই বইটির মূল বিষয়বস্তু। স্বাধীনতার পরপরই যে ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রাম গ্রহন করা হয়েছিলো সেই প্রোগ্রামের ধারাবাহিকতায় দেশের অর্থনীতি কতটুকুই বা কি পেল? কতটুকুই বা উন্নত জীবনযাপনকে সঙ্গী করে নিতে পারলো দেশের আপামর জনগণ সেই বিশ্লেষণ দিয়ে শুরু হয়েছে বইটি।
দেখা যাবে,আমাদের দেশে বিশ্বব্যাংক,আইএমএফ,এডিবির তৎপরতা।এডিবি এশিয়া কেন্দ্রীক হলেও কেনই বা এর প্রধান পৃষ্ঠপোষকতা করে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র? এডিবির প্রধান সবসময় নির্বাচিত হবেন জাপান থেকে।আচ্ছা,এডিবি যে লক্ষ্যে গঠিত হয়েছপ সেই লক্ষ্য কি পূরণ করতে পারছে?নাকি নিম্নআয়ের দেশগুলোর স্বার্থের দিকে না তাকিয়ে শুধু উর্ধগতি সম্পন্ন দেশগুলোর ভালোই দেখা হচ্ছে এডিবির প্রধান কাজ?এরকম আরো বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে যেমনঃ
-আমাদের দেশে যে বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে তা থেকে দেশ কতটুকুই বা লাভবান হচ্ছে...
-বিশ্বের অর্থনৈতিক অস্থিরতার কারণে যে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক দেশে ফিরে আসছে মধ্যপ্রাচ্য,সিঙ্গাপুর ও অন্যান্য দেশ থেকে তার কারণ বিশ্লেষণ
-ক্ষুদ্র দেশে পরিকল্পনা মাফিক না এগোলে যে উন্নয়ন করা এক প্রকার অসম্ভব, কীভাবেই বা উন্নতি করা সম্ভব? তার কিছু সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা..
এসব নিয়েই বইটি লেখক পাঠকদের হাতে তুলে দিয়েছেন।
→পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ উন্নয়ন ও অর্থনীতি বিষয়ক গবেষণার কাজে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী বা যেকোনো আগ্রহী মানুষের জন্য বইটি বিস্তারিত ভাবে সহজবোধ্য করে সাজানো হয়েছে।বিশ্লেষণ গুলো সম্পূর্ণ বইজুড়ে চোখে পড়ার মতোই ছিলো।
→লেখকের লেখনী নিয়ে কিছু কথাঃ লেখক অকপটে স্বীকার করেছেন তিনি অর্থনীতিবিদ নন।তথাপিও,নিজের প্রচেষ্টায় বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে একজন অভিজ্ঞ অর্থনীতিবিদের চেয়ে যে কোনো অংশেই তিনি কম যান না;তারই মুন্সিয়ানার প্রমাণ রেখেছেন তিনি লেখনীর মাধ্যমে।
→কিছু আলাদা অনুভূতিঃ দেশের অর্থনীতি সম্পর্ক সম্মক ধারণা পেতে হলে বইটি যেকেউ হাতে তুলে নিতে পারেন। আমার কাছে একজন সাধারণ পাঠকের জন্য তৈরি সহজপাঠ্য একটি বই বলে মনে হয়েছে।যে কারণে রেটিংটা একটু বেশিই দিতে হচ্ছে।
রাজু আহমেদ ১৯৭৮ সালে মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার খেতেরপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মজিবুর রহমান এবং মা নূরজাহান বেগমের সাত সন্তানের মধ্যে তিনি চতুর্থ। ২০০৫ সালে তিনি অন্তরা আহমেদের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর অনন্ত আহমেদ ও অরণ্য আহমেদ নামে দুই ছেলে রয়েছে। ১৯৯৫ সালে এসএসসি পাস করেন রাজু আহমেদ। এইচএসসি পাস করেন ১৯৯৭ সালে ঢাকা কলেজ থেকে । এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে তিনি সাংবাদিকতা শুরু করেন। প্রথমে সাপ্তাহিক খবরের কাগজ, সাপ্তাহিক ২০০০ এবং পাক্ষিক ক্রীড়া জগৎ পত্রিকায় প্রদায়ক হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তীতে দৈনিক আজকের কাগজে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে যোগ দেন। ২০০৯ সালে তিনি সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে দৈনিক জনকণ্ঠে যোগদান করেন। এরপর ২০১২ সালে গাজী টেলিভিশনে সিনিয়র রিপোর্টার পদে যোগ দেন। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে তিনি বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে পদোন্নতির পাশাপাশি প্রধান প্রতিবেদকের দায়িত্ব পান। বর্তমানে তিনি এই দায়িত্ব পালন করছেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি রাজু আহমেদ সমাজ ও অর্থনীতির বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা কাজে নিয়োজিত আছেন। তাঁর কয়েকটি গবেষণাপত্র নিয়ে ২০১৮ সালে ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা ও দারিদ্র্য বিমোচন’ নামে বই প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্টার হিসেবে তিনি ২০০৬ সালে প্যানোস সাউথ এশিয়া ফেলোশিপ, ২০০৭ সালে জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড, ২০০৮ সালে এফপিএবি সাংবাদিকতা পুরস্কার, ২০১১ ও ২০১৮ সালে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের ‘বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড’, ২০১১ সালে ইউএনএফপিএ-ডিজিএফপি জার্নালিজম অ্যাওয়ার্ড, ২০১১ ও ২০১৩ সালে সিএসএফ-ফ্রেড হলোস ফাউন্ডেশন ফেলোশিপ অ্যাওয়ার্ড, ২০১৪ সালে ডিআরইউ-গ্রামীণফোন বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড, ২০১৮ সালে নেদারল্যান্ডে আইএএস স্কলারশিপ, অ্যাকশনএইড-ইআরএফ ফেলোশিপ ২০১৮ এবং পরিবার পরিকেল্পনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০১৯ লাভ করেন।