
User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
গুরুত্বপূর্ণ বই, সবার পড়া উচিত।
Was this review helpful to you?
or
ড. আফিয়া সিদ্দিকি। গত দুই দশক ধরে আন্তর্জাতিক রাজনীতি, মিডিয়া আর ওয়ার অন টেরর-এর আলোচনায় এই নামটা বারবার উঠে এসেছে। কেউ তাঁকে ডাকেন লেডি আল-কায়েদা, আবার কারও কাছে তিনি ডটার অফ দ্য উম্মাহ বা নির্যাতিতা বোন। কিন্তু মিডিয়ার এসব লেভেলিংয়ের বাইরে আসল মানুষটা কে? তাঁর সাথে ঠিক কী হয়েছিল? সম্প্রতি সাইয়েদ আবদুল্লাহ আল আমিনের লেখা ড. আফিয়া সিদ্দিকি: অপ্রকাশিত সত্য বইটি পড়ার সুযোগ হলো। বইটি শেষ করার পর বেশ কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে ছিলাম। বুকের ভেতর একটা অদ্ভুত ভারি অনুভূতি কাজ করছিল। বারবার শুধু একটা কথাই মনে হচ্ছিল—পৃথিবীর কারাগারের দেয়ালগুলো তো ইট-পাথরের, কিন্তু আমাদের বিবেকের দেয়াল কি তার চেয়েও শক্ত? বইয়ের ভেতরে যা আছে; বইটা শুরু হয় আফগানিস্তানের ইতিহাস দিয়ে—কিভাবে ভূখণ্ডটি পরাশক্তিদের কবরস্থান হয়ে উঠল, সোভিয়েত আগ্রাসন থেকে শুরু করে নাইন-ইলেভেন পরবর্তী মার্কিন আগ্রাসন পর্যন্ত। প্রথমদিকে আমার মনে হচ্ছিল, আমি কি আফিয়ার জীবনী পড়ছি নাকি আফগানিস্তানের ইতিহাস? কিন্তু একটু পরেই বুঝলাম, আফিয়ার ট্র্যাজেডি বুঝতে হলে এই জিওপলিটিক্যাল প্রেক্ষাপট বোঝাটা জরুরি। বইটিতে আফিয়ার ব্যক্তিগত জীবন, তাঁর এমআইটি (MIT)-তে পড়ার সময়কার মেধা, ধর্মীয় মূল্যবোধ, আধুনিক বিজ্ঞান ও ইসলামি জ্ঞানের মেলবন্ধন ঘটিয়ে পাকিস্তানের শিক্ষাব্যবস্থাকে সাজানোর স্বপ্ন এবং ৯/১১ পরবর্তী সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে বৈশ্বিক ষড়যন্ত্রে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে পরবর্তীতে সিআইএ-এর ব্ল্যাক সাইট কারাগারের ধূসর নারী হয়ে ওঠার ঘটনাগুলো বিস্তারিত উঠে এসেছে। বিশেষ করে ২০০৩ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তাঁর জীবনের যে সময়টা ‘অন্ধকার’ বা ‘মিসিং লিংক’ হিসেবে পরিচিত, বইটিতে সেই সময়ের রোমহর্ষক বর্ণনা তথ্যনির্ভরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। কুখ্যাত বাগরাম কারাগারের সেই ‘কয়েদি নম্বর ৬৫০’ বা ‘গ্রে লেডি অফ বাগরাম’ কি সত্যিই আফিয়া ছিলেন? বইটিতে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত আর রেফারেন্স দিয়ে সেই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে। যা ভালো লেগেছে; সচরাচর এই ধরনের ক্যাটাগরির বইগুলোতে তথ্যের ঘাটতি থাকে, কিন্তু এই বইতে লেখক প্রচুর ফুটনোট ও রেফারেন্স ব্যবহার করেছেন। আবেগের বশে ঢালাও মন্তব্য না করে বিভিন্ন বই, আন্তর্জাতিক পত্রিকার রিপোর্ট এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান তুলে ধরেছেন। সীমাবদ্ধতা; বইটি পড়ার সময় আমার মনে হয়েছে, শুরুর দিকে আফগানিস্তানের ইতিহাসের অংশটা সাধারণ পাঠকের জন্য একটু বেশিই দীর্ঘায়িত—যা বইয়ের মোট ১০৪ পৃষ্ঠার ৫৫ পৃষ্ঠা পর্যন্ত। সুতরাং যারা আফিয়ার ঘটনা জানতে চান, তাদের প্রথমে কিছুটা ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হবে এবং যারা শুধুমাত্র বইয়ের নামের দিকে দৃষ্টি করে, সরাসরি আফিয়ার ঘটনা জানতে চান—তাদের জন্য কিছুটা হতাশাও হতে পারে। বইটি কাদের পড়া উচিত? ১. যাঁরা আন্তর্জাতিক রাজনীতি, বিশেষ করে নাইন-ইলেভেন পরবর্তী বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়ে আগ্রহী। ২. যাঁরা জানতে চান, কেন একজন উচ্চশিক্ষিত নিউরোসায়েন্টিস্টকে নিয়ে বিশ্বজুড়ে এত তোলপাড়। ৩. যাঁরা মানবাধিকার এবং ওয়ার অন টেরর-এর পেছনের কালো অধ্যায়গুলো সম্পর্কে জানতে চান। শেষ কথা; আমরা মিডিয়াতে যা দেখি বা শুনি, তার বাইরেও যে সত্যের আরেকটা পিঠ থাকে—বইটি জলজ্যান্ত উদাহরণ! পড়া শেষে আপনার গলার কাছে এক দলা অভিমান আর অসহায়ত্ব দলা পাকিয়ে উঠবে। একজন এমআইটি গ্র্যাজুয়েট, একজন নিউরোসায়েন্টিস্ট, একজন কুরআনের হাফিজা এবং দিনশেষে একজন মা—যিনি পৃথিবীকে হয়তো অনেক কিছু দিতে পারতেন, তাঁকে কীভাবে ইতিহাসের এক অন্ধকার গহ্বরে ‘কয়েদি নম্বর ৬৫০’ বানিয়ে ছুড়ে ফেলা হলো, সেই গল্প মেনে নেওয়া কঠিন। পরিশেষে কিছু বই পড়ে শেষ করা যায়, আর কিছু বই পড়া শেষ হলেও পাঠককে তাড়া করে বেড়ায়। এটি সেই দ্বিতীয় দলের বই। হয়তো সাহিত্যিক বিচারে বা রচনার জৌলুসে এটি কোনো কালজয়ী বই নয়, খুব সাধারণ একটি বই। কিন্তু বইটির ছত্রে ছত্রে যার দীর্ঘশ্বাস মিশে আছে—সেই নামটির ভার এতটাই যে, তা আপনাকে মুহূর্তেই স্তব্ধ করে দেবে। বই পরিচিতি— বইয়ের নাম: ড. আফিয়া সিদ্দিকি লেখক: সাইয়েদ আবদুল্লাহ আল আমিন প্রকাশনী : কালান্তর প্রকাশনী পৃষ্ঠা: ১o৪ মূল্য: ১৪০ ৳
Was this review helpful to you?
or
বই : ড. আফিয়া সিদ্দিকি (অপ্রত্যাশিত সত্য) লেখক: সাইয়্যেদ আব্দুল্লাহ আল আমিন। পাঠ রিভিউ: বইটিতে লেখক অসাধারণ দক্ষতায় একটি জটিল, রাজনৈতিক ও মানবিক বিষয়কে পাঠকের কাছে স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন। ভাষার গাম্ভীর্য, তথ্যনির্ভর বিশ্লেষণ এবং আবেগময় বর্ণনার মাধ্যমে তিনি ড. আফিয়া সিদ্দিকির জীবনের প্রতিটি অধ্যায়কে বাস্তবতার আয়নায় তুলে ধরেছেন। একজন লেখক হিসেবে তার দায়বদ্ধতা, গবেষণার গভীরতা ও অনুভূতির সততা সত্যিই প্রশংসনীয়। এ ধরনের সাহসী লেখা আমাদের সমাজ ও উম্মাহকে ভাবায়,জাগায়। “ড. আফিয়া সিদ্দিকি” নামটি শুধু একজন নারীর পরিচয় নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে মুসলিম উম্মাহর সম্মান, আত্মত্যাগ ও অবিচারের বিরুদ্ধে এক জীবন্ত প্রতীক। বইটি পড়ার পর মনে হয়েছে—এটা কোনো সাধারণ জীবনী নয়; এটি একজন মুসলিম নারীর প্রতিভা, স্বপ্ন ও আত্মিক সংগ্রামের হৃদয়ছোঁয়া দলিল। বইটির থিম অত্যন্ত গভীর ও নাড়া দেওয়ার মতো। আফিয়া সিদ্দিকি ছিলেন একজন মেধাবী মুসলিম নারী, যিনি আধুনিক বিজ্ঞানের সঙ্গে আত্মার শিক্ষা একত্রে করে ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর চিন্তা, কাজ ও আত্মার মুক্তির সংগ্রামই যেন হয়ে দাঁড়ায় তাঁর অপরাধ! বইটি আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়—কিভাবে এক মুসলিম নারীকে ৮৬ বছরের শাস্তি দিয়ে এক প্রকার বিচারবহির্ভূত শাস্তির উদাহরণ স্থাপন করা হয়েছে। এই বইয়ের সবচেয়ে শক্তিশালী দিক হচ্ছে—এটি আমাদেরকে শুধুই আফিয়ার দুঃখগাথা শোনায় না, বরং আমাদের আত্মজিজ্ঞাসায় বাধ্য করে। আফিয়া সিদ্দিকি শুধু একজন ব্যক্তি নন—তিনি উম্মাহর মর্যাদার প্রশ্ন। প্রতিটি পৃষ্ঠা যেন এক একটি প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়—আমরা কেন চুপ? কেন প্রতিরোধ করি না? বইটি পড়ে হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়, আবার জেগে ওঠে দায়িত্ববোধ। “ড. আফিয়া সিদ্দিকি” বইটি মুসলিম সমাজের বিবেককে জাগাতে এক অনন্য প্রচেষ্টা। বইটি শুধু পড়ার জন্য নয়, ভাবার জন্য, জেগে ওঠার জন্য।
Was this review helpful to you?
or
বইটি সুগঠিত, ভাষা সহজ এবং বর্ণনা অত্যন্ত প্রবাহমান। আফগানিস্তানের অস্থিরতা, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ ও পরাশক্তির দ্বিমুখী আচরণ—সবই লেখক খুব স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন। শুরু থেকেই পাঠক প্রস্তুত হয়ে ওঠেন ড. আফিয়া সিদ্দিকির হৃদয়বিদারক বাস্তবতার দিকে। ড. আফিয়ার মেধা, শিক্ষাজীবন এবং পরবর্তীতে তাঁর ওপর নেমে আসা অমানবিক নির্যাতনের বর্ণনা গভীরভাবে নাড়িয়ে দেয়। তথ্য-নির্ভর উপস্থাপনা এবং মানবিক অনুভূতির সুন্দর সমন্বয়ে লেখক তাঁর সংগ্রাম, সাহস ও অবিচল চরিত্র পাঠকের সামনে জীবন্ত করে তুলেছেন। বইটি শুধু একজন নারীর গল্প নয়; এটি বিশ্ব রাজনীতির মুখোশ উন্মোচনের দলিল। পাঠককে ভাবায়, প্রশ্ন করতে শেখায়, এবং নির্লিপ্ত থাকতে দেয় না।
Was this review helpful to you?
or
পাঠ রিভিউ: বইটি অধ্যায়ভিত্তিক সুগঠিত, আর লেখকের বর্ণনাশৈলী সহজ, প্রবাহমান এবং পাঠকবান্ধব। শুরুতেই আফগানিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিরতা, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ, বৈশ্বিক ভূরাজনীতি এবং পরাশক্তির দ্বিমুখী স্বরূপকে তিনি দক্ষতার সঙ্গে উপস্থাপন করেছেন। এর ফলে পাঠক অজান্তেই প্রস্তুত হয়ে ওঠেন পরবর্তী অধ্যায়গুলোর গভীর ও জটিল বিষয়গুলো গ্রহণের জন্য। প্রথম অধ্যায়গুলো যেন মঞ্চ সাজানোর প্রহর—আর সেই সাজানো মঞ্চের কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে আছেন এক নীরব, দৃঢ় ও অবিচল নারী, ড. আফিয়া সিদ্দিকি। ড. আফিয়ার শৈশব, অনন্য মেধা এবং যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষাজীবনের উজ্জ্বলতা পড়তে গিয়ে মনে হয়, তিনি যেন সৌভাগ্যের আশীর্বাদপ্রাপ্ত এক প্রতিভা। কিন্তু গল্পের মোড় খুব দ্রুত পাল্টে যায়। একসময়ের উজ্জ্বল শিক্ষার্থী পরিণত হন আন্তর্জাতিক রাজনীতির নির্মম খেলায় এক বলির পাঁঠায়। অপহরণ, অমানবিক নির্যাতন, গোপন কারাগার এবং সাজানো অভিযোগ—সব মিলিয়ে তাঁর জীবন হয়ে ওঠে এক প্রচণ্ড বেদনাময় শোকনাটক। লেখক দক্ষতার সঙ্গে এই সব ঘটনার বিশদ বর্ণনা তুলে ধরেছেন, যাতে পাঠক ড. আফিয়ার ব্যক্তিগত সংগ্রাম ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক তিমির কাঁটাছেঁড়া বাস্তবতার মধ্যে প্রবেশ করতে পারেন। প্রতিটি অধ্যায় যেন এক নতুন মঞ্চ, যেখানে ড. আফিয়া সরাসরি শব্দে কথা না বললেও তাঁর দৃঢ়তা, সাহস ও অবিচল চরিত্র পাঠকের কাছে স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়। তিনি কেবল তথ্যের স্তুপ চাপিয়ে দেননি, আবার আবেগের অতিরিক্ত ঢেউও তোলেননি। মানবিক বোধ ও নথিভিত্তিক বিবরণের নিখুঁত সমন্বয়ে তিনি পাঠককে নিয়ে গেছেন সেই স্যাঁতসেঁতে কারাগারের দেয়ালে, যেখানে বছরের পর বছর ড. আফিয়া নির্যাতনের শিকার হয়েও মাথা নত করেননি। তাঁর যন্ত্রণার প্রতিটি স্তর এত প্রাণবন্তভাবে ফুটে ওঠে যে পাঠক যেন নিজেই ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে আছেন। পাতা উল্টাতে উল্টাতে বারবার মনে হয়— এ কি সত্যিই সম্ভব? একজন নারী কি এতটা নিষ্ঠুরতার শিকার হতে পারে? একটি রাষ্ট্র কি সত্যকে এত সহজে আড়াল করতে পারে? এই প্রশ্নগুলো কেবল পাঠকের মনে সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং মানবতার প্রতিটি দরজায় কড়া নাড়ে। বইটি শেষ করার পরও সেই কড়া নাড়ার শব্দ দীর্ঘ সময় ধরে মনের ভেতর প্রতিধ্বনিত হয়। কেন বইটি গুরুত্বপূর্ণ: • এটি কেবল একজন নারীর জীবনের গল্প নয়, বরং বিশ্ব রাজনীতির মুখোশ উন্মোচনের দলিল। • নিপীড়ন, প্রতিবাদ ও ন্যায়ের আর্তচিৎকারের এক নীরব ইতিহাস ফুটে ওঠে। • বইটি পাঠককে নির্লিপ্ত থাকতে দেয় না; বরং চিন্তা করতে এবং প্রশ্ন করতে শেখায়। • ভাষা সহজ, বর্ণনা প্রাঞ্জল, এবং প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ শক্তিশালী। • তথ্যের যথার্থতা, উপস্থাপনার সততা এবং ড. আফিয়ার মানবিক দিক—সবই পাঠকের মনে গভীর প্রভাব ফেলে। বইটি পড়ে মনে হয়—ড. আফিয়া সিদ্দিকি কেবল একটি নাম নয়; তিনি মানবতার প্রতি দায়বদ্ধতার এক প্রতীক। তাঁর মুক্তি কোনো রাজনৈতিক আলোচনার বিষয় নয়; এটি মানবিক এবং ন্যায়ের এক অক্ষয় দাবি। — নুমান হাবিব




