বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নে কৃষিখাতের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। একদা খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণতা অর্জনে বহু চড়াই-উত্রাই পেরিয়ে আসতে হয়েছে। স্বাধীনতার পর সাড়ে সাত কোটি মানুষের খাদ্য চাহিদা মেটাতে আমদানির উপর নির্ভর করতে হতো। দরিদ্র ও অতি-দরিদ্র মানুষের দুর্ভোগ ছিল চরমে। দেশে জমি বাড়ার সুযোগ না থাকলেও জনসংখ্যা বাড়ছে, বর্তমানে এসংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি উন্নয়নে গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন। দেশে খাদ্য উৎপাদন না বাড়লে মানুষের অন্যতম প্রধান মৌলিক চাহিদা পূরণে ব্যর্থতা থেকে যাবে। তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে অন্তর্ভুক্ত করে কৃষিকে একটি শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করাতে চেয়েছিলেন। সেই লক্ষ্যে সমবায়ের ডাক দিয়েছিলেন। তাঁর প্রদর্শিত ও দূরদর্শী পথ অনুসরণ করলে দেশ আরও আগে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষিখাতের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেন এবং পাশাপাশি তাঁর নির্দেশে সৃষ্ট পারিপার্শ্বিকতায় কৃষক ও কৃষিশ্রমিক কৃষিকে এগিয়ে নিতে শ্রম দিতে থাকে। ফলে ধানের উৎপাদনের সাথে সাথে রবি শস্য, শাক-সব্জি, ফল, পোল্ট্রি, গবাদি পশু এবং মৎস্য চাষে দেশ অনেক উন্নতি করেছে। উৎপাদনের এ ধারা অব্যাহত রাখতে বর্তমান সরকার প্রয়োজনীয় সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে।
ড. জাহাঙ্গীর আলম তাঁর কৃষি ও সমবায় গ্রন্থটিতে কৃষি উন্নয়নের বিভিন্ন বিষয়ে সারগর্ভ আলোচনা করেছেন। তিনি কৃষি উৎপাদনের দিকে যেমন গুরুত্ব দিয়েছেন, তেমনি কৃষকের জন্য কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার কথাও বলেছেন। কোন কোন বিষয়ে সরকারের আরও নজর দেয়া দরকার সেকথাও বলেছেন।
ড. জাহাঙ্গীর আলমের লেখা অত্যন্ত প্রাণবন্ত। ছোট ছোট বাক্যে তিনি তার ভাবনা তুলে ধরেছেন। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, গবেষক, অধ্যাপক এবং কৃষি অর্থনীতিবীদ। গবেষণার জন্য তিনি রাষ্ট্রপতি কৃষি পুরস্কার এবং একুশে পদকও পেয়েছেন। আমার বিশ্বাস তাঁর অব্যাহত গবেষণাকর্ম দেশ ও জাতির কল্যাণ বয়ে আনবে। ড. জাহাঙ্গীর আলমের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি। এই বইয়ের বহুল প্রচার হউক, এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।