রহস্য সিরিজ পড়ার নেশা রহিয়াছে? বহুদিন কোন উৎকৃষ্ট শ্রেণীর মগজের পুষ্টিকারক ডিটেকটিভ বইয়ের অভাব বোধ করিতেছিলেন? সেই অভাব অভাবনীয় উপায়ে পূর্ণ করিতে চলিয়াছে বুক ফার্ম প্রকাশন। তাঁ... See more
রহস্য সিরিজ পড়ার নেশা রহিয়াছে? বহুদিন কোন উৎকৃষ্ট শ্রেণীর মগজের পুষ্টিকারক ডিটেকটিভ বইয়ের অভাব বোধ করিতেছিলেন? সেই অভাব অভাবনীয় উপায়ে পূর্ণ করিতে চলিয়াছে বুক ফার্ম প্রকাশন। তাঁহাদের অন্যতম লেখক কৌশিক মজুমদারের লেখা যিনি একবার পড়িতে শুরু করিয়াছেন, বই শেষ না হওয়া অবধি দুনিয়ার সমস্ত কিছু তিনি ভুলিতে বাধ্য। কৌশিকবাবুর 'সূর্যতামসী' উপন্যাসখানি অতীব চিত্তাকর্ষক। ইহার প্রতি অধ্যায় দুর্দান্ত চমক, প্রতি পাতা চরম উত্তেজনা, আনন্দ ও বিষ্ময়ের সৃষ্টি করিবেই। এই ধরণের বই বাজারে প্রথম। কাহিনীর এক বড় অংশ জুড়িয়া রহিয়াছে উনিশ শতকের কলিকাতা, যাদুবিদ্যা, ভয়ংকর ষড়যন্ত্র, একদল উন্মাদ, ফ্রিম্যাসনের গুপ্ত সমিতি আর বেশ কিছু নৃশংস হত্যাকান্ড। রহিয়াছে বর্তমান কালের চন্দননগরে অনূরুপ হত্যা, গুপ্তধনের আভাস আর এক তরুণ ডিটেকটিভ। বইয়ের অন্তিমে এমন চমক উপস্থিত যাহাতে আপনাকে দ্বিতীয়বার বইটি পড়িতেই হইবে। খুব কম ডিটেকটিভ বইয়ের ক্ষেত্রে এমনটি বলা যায়।
জন্ম ১০ এপ্রিল, ১৯৮১, কলকাতা। কৃতি ছাত্র। বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান সংস্থা থেকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং পি. এইচ. ডি. তে সেরা ছাত্রের স্বর্ণপদক লাভ করেছেন। নতুন প্রজাতির এক ব্যাকটেরিয়ার আবিষ্কারক, যার নাম তাঁর নামে Bacillus sp. KM5 করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ধান্য গবেষণা কেন্দ্র, চুঁচুড়ায় বৈজ্ঞানিক পদে কর্মরত। কেতাবি পড়াশুনোর বাইরে নানা বিষয়ে পড়াশুনো ও লেখালেখি তাঁর শখ। দেশে বিদেশে গবেষণাপত্রে নানা প্রবন্ধ লেখার পাশাপাশি নিয়মিত লেখালেখি করেন নানা দৈনিক ও সাময়িক পত্রিকায়। জার্মানী থেকে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর লেখা গবেষণাগ্রন্থ Discovering Friendly Bacteria: A Quest (২০১২)। ভারতীয় ভাষায় প্রথম কমিকসের বিস্তারিত ইতিহাস ‘কমিকস ইতিবৃত্ত’(২০১৫) সুধীজনের প্রশংসাধন্য। সম্পাদনা করেছেন ‘সিদ্ধার্থ ঘোষ প্রবন্ধ সংগ্রহ’ (২০১৭)।
বই: পাঠক সমাজে 'ম্যাসন সিরিজ' খ্যাত ৩ টি বই: • সূর্যতামসী • নীবারসপ্তক • অগ্নিনিরয় লেখক: কৌশিক মজুমদার জনরা: ডিটেকটিভ উপন্যাস প্রকাশনী: বুক ফার্ম
• ব্যাক্তিগত রেটিং: ৮.৫/১০
(স্পয়লার মুক্ত রিভিও)
• প্লট: ১৮৯২ সালে চিনাপাড়ায় অজ্ঞাত ব্যাক্তির লাশ খুঁজে পাওয়া থেকে যে রহস্য আর সরযন্ত্রের সূচনা তার শেষ হবে ২০১৮ তে এসে। সে রহস্যের বেড়াজালে কিভাবে জড়িয়ে পড়েছে প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়, তারিণী এবং গণপতির মতো চরিত্র তার উত্তর আছে এ তিনটি উপন্যাসে। 'সূর্যতামসী' যেখানে শেষ, ঠিক সেখান থেকেই কাহিনী চলমান করে 'নীবারসপ্তক', যার অন্ত ঘটায় শেষ খন্ড 'অগ্নিনিরয়'। প্রতিটি খন্ডেই আছে একের পর এক রহস্য উন্মোচন। যেহেতু, প্রতিটা খন্ড পরস্পর সম্পর্কিত তাই নির্দিষ্ট করে আলাদা আলাদা প্লট বলাটা সমীচীন হবে না।
• একাধিক টাইমলাইন ও কাহিনী বিন্যাস সমান্তরাল রেখে লেখক যেভাবে পাঠকের টানটান উত্তেজনা ধরে রাখার চেষ্টা চালিয়েছেন, তা সত্যি প্রশংসনীয়। গল্পে মূল টাইমলাইন ৩ টি: ১৮৯২, ১৯১১ এবং ২০১৮। এছাড়াও বেশ কিছু সময়কালের বর্ণনা রয়েছে। তৎকালীন কলকাতা, এর মানুষজন, সংস্কৃতি ও সমাজ ব্যাবস্থার বাস্তব চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে উপন্যাসে।
• উপন্যাসে উল্লিখিত অধিকাংশ চরিত্র এবং বেশ কিছু ঘটনা যথাক্রমে বাস্তব ও সত্য। এসকল সত্যিকার চরিত্র এবং ঘটনার সাথে লেখক এতো সুন্দর করে তার কাল্পনিক চরিত্র ও ফিকশনকে মিশিয়ে ফেলেছেন, যা বলার ভাষা রাখে না। এক্ষেত্রে, সুন্দর শব্দচয়ন ও সাধু-চলিত ভাষার যথাযথ প্রয়োগ প্রশংসার দাবীদার।
গল্পে এতগুলো জাম্প কাট থাকা সত্বেও আপনার মনোযোগ বিচ্ছিন্ন হবে না,তার নিশ্চয়তা একশো শতাংশ। আর এর জন্য দায়ী গল্পের প্রতিটি চরিত্র। তারিণী, শৈলচরণ, গণপতি, প্রিয়নাথ, তুর্বশু, দেবাশীষ, লখন, লক্ষ্মীমতি, ময়না, বিশ্বজিৎসহ প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের নিজস্ব দিক, চিন্তা ভাবনা, দৃষ্টিভঙ্গি এবং ঘটনা এমনভাবে লেখা যেনো তাদের জীবন্ত মনে হবে। তবে, ব্যাক্তিগতভাবে আমার প্রিয় চরিত্র 'সাইগারসন মোহেলস্'। আপনি যদি গোয়েন্দা গল্পের ভক্ত হয়ে থাকেন, তবে এই চরিত্র নিঃসন্দেহে আপনার প্রিয় গোয়েন্দার কথা মনে করাবে।
গল্পের প্রতিটি মোচড় অবাক করার মতো এবং রহস্যের নেশায় বুদ হতে তা পাঠককে আরো বেশি বাধ্য করে।
• প্রচ্ছদ: নতুন সংস্করণের প্রচ্ছদ তৈরি করেছেন কামিল দাস এবং এর পরিকল্পনায় কৌশিক মজুমদার। প্রতিটি প্রচ্ছদই সুন্দর এবং রহস্যের ইঙ্গিত দেয়। তবে ব্যাক্তিগতভাবে আমার কাছে 'নীবারসপ্তক' এর প্রচ্ছদটা বেশি পছন্দের।
• পরিশেষে, একজন ভালো লেখক মানেই ভালো পাঠক। নিখুঁত সুন্দর একটা লেখনীর জন্যে যে সেই বিষয়ে জ্ঞান ও জ্ঞানচর্চা থাকাটা কতোটা জরুরি, তার প্রমাণ এই তিনটি উপন্যাস। লিখতে গিয়ে লেখক যেসকল ঘটনা, চরিত্র ও ইতিহাসের প্রেক্ষাপট ব্যাবহার করেছেন তার জন্যে নিঃসন্দেহে তাকে প্রচুর পড়তে হয়েছে। প্রমাণস্বরূপ, উপন্যাসের শেষে সহায়ক গ্রন্থের লম্বা একটা তালিকাও পাবেন।
• ব্যাক্তিগত মতামত: উপন্যাসে অনেক চরিত্র ও ঘটনার উল্লেখ থাকায় এবং প্রতিটি খন্ড পরস্পর কানেক্টেড থাকায়, আমি পরামর্শ দিবো হাতে যথেষ্ট সময় নিয়ে যেনো পাঠক তিনটি বই পর্যায়ক্রমে পড়ে শেষ করেন। এক্ষেত্রে, কাহিনী, চরিত্র এবং প্রেক্ষাপট যেমন মনে থাকবে তেমনি দ্বিগুণ উপভোগ্য হবে।
~ইয়াসির আল সাইফ
Read More
Was this review helpful to you?
By Israt Maria,
08 Jul 2024
Verified Purchase
সূর্যতামসী এক ভয়ংকর জাদুখেলার নাম। এই জাদুকে কেন্দ্র করেই ১৮৯২ সালে ঘটে যায় এক সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। জাদুর স্টেজেই খুন হয় জাদুকর ও তার সহকারী। এই খুনের জন্যেই ৪ জন খুব ইন্টারেস্টিং চরিত্র পড়ে যায় এক সুতায় গাথা। তারিনীচরণ - তখনকার সময়ের বাংলার এক প্রাইভেট ডিটেক্টিভ, প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়-গোয়েন্দা বিভাগের পুলিশ, গনপতি চক্রবর্তী- শখের জাদুকর, যে পড়ে জাদুবিদ্যায় অনেক খ্যাতি লাভ করে এবং এক ছদ্মবেশী ইংরেজ ডিটেকটিভ সাইগারসন (অনেকে পরবর্তীকালে মনে করেন ইনিই রহস্যের রাজা শার্লক হোমস)। এই ৪ জন মিলেই রহস্য উদঘাটন করেন অবশেষে। কিন্তু সেখানেই শেষ নয়। এই খুন করা হয় চিনের এক প্রাচীন পদ্ধতিতে, লিংচি, যার অর্থ সহস্র আঘাতে মৃত্যু, এতে অপরাধীকে কষ্ট দিয়ে মারা হয়, তার শরীর থেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে চামড়া ছাড়িয়ে নেওয়া হয় জ্যান্ত থাকতে থাকতে, শেষে তার পুরুষাংগ কেটে তার বুকে ছোরা ঢুকিয়ে তার ভবলীলা সাংগ করা হয়। প্রায় ১২৬ বছর পর সেই খুনের ঘটনা খুচে দেখার চেষ্টা করে দেবাশীষ নামের এক লোক। তার পুরোন জিনিষ ঘাটার শখ থেকেই সে পেয়ে যায় কোটি কোটি টাকার গুপ্তধনের সন্ধান। তার জন্য তার লাগবে তারিনীচরণের বংশধর। ভাগ্যক্রমে সে পেয়েও গেলো। কিন্তু ভাগ্য বেশি দিন সাথ দিল না, একই পদ্ধতিতে মেরে ফেলা হল তাকেও, কে বা কারা মেরে ফেলল, কেনই বা মারল, কিসের সন্ধান পেয়েছিল দেবাশীষ কেউ জানে না। এরই সন্ধানে নেমে পড়ে তারিনীচরণের নাতি তূর্বসু, রক্তে তার রহস্য উদঘাটনের নেশা।
#সূর্যতামসী
Read More
Was this review helpful to you?
By Dipto Das,
20 Mar 2023
Verified Purchase
##একটা ভালো বই মানে কি...?
গল্পের ভুমিকার কিছু পেজ পড়া শুরু করবেন আপনি। বাকি পেজ গুলা লেখক তার লেখার মাধ্যমে আপনাকে পড়তে বাধ্য করবে। এটি ঠিক তেমন একটা বই।
##পছন্দ কি সবার এক..?
না , এক না । তবে বাজি ধরে বলতে পারি বই পড়তে যদি ভালোবাসেন ( যদি একটু কম ও বাসেন কিন্তু চান ) তবে বইটা আপনার ভালো লাগবেই। বই পড়তে আপনার আলসেমি লাগে তবেও সমস্যা নেই বই আপনাকে পড়াবে । কষ্ট করে পড়তে হবে না।
Read More
Was this review helpful to you?
By Tahsin Tarannam Rimi,
02 Feb 2023
Verified Purchase
In a word, awesome!!! A good combination of history and mystery. If you a mystery reader, is is must read. Eagerly waiting to read the next part.
Read More
Was this review helpful to you?
By Asad Sheikh ,
27 Mar 2025
Verified Purchase
ডিটেকটিভ ম্যাসন সিরিজ। খুন অতঃপর অনুসন্ধান টান টান উত্তেজনা। লেখাগুলো অনেকের কাছে কঠিন মনে হতে পারে তবে হতাশ হবেন না বইটি পড়ে।
Read More
Was this review helpful to you?
By Jakir Hossain,
01 Feb 2025
Verified Purchase
এটা একটা ডিটেকটিভ বই। গল্পের প্রতিটা চরিত্রই রহস্যময় আর গল্পের শেষটা আপনাকে অবাক হতে বাধ্য করবে, নিশ্চিন্তে বইটা কিনতে পারেন।
Read More
Was this review helpful to you?
By Md. Sakibul Hasan,
21 Jan 2023
Verified Purchase
Awesome detective thriller enriched with history and mystery..
এই বইটা ও একই নামে একই লেখকের আরেকটা বই, পার্থক্য কি দুইটার??Questioned by Pranta Kishor Royon 07 Jun, 2024
A:
প্রিয় গ্রাহক, বই দুটি একই বই, পার্থক্য শুধু প্রকাশনির। একটি পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রকাশিত আর অন্যটি বাংলাদেশ থেকে। ধন্যবাদ।Answered by Rafid Ahmedon 07 Jun, 2024
Q:
বইটিতে টোটাল কয়টি পেজ আছে??Questioned by tom****comon 25 Apr, 2024
A:
প্রিয় গ্রাহক, বইটির পৃষ্ঠা সংখ্যা ২৩৪। ধন্যবাদ। Answered by Rafid Ahmedon 25 Apr, 2024