কবি, কথাসাহিত্যিক ও পর্যটক ক্যাপ্টেন (অব.) ডাঃ রাহেলা খুরশীদ জাহান (মঞ্জু), যিনি বহু দিন যাবৎ বাংলা সাহিত্যচর্চা করছেন। ইতিমধ্যে তাঁর বেশ কিছু গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তার মধ্যে বেশ কিছু কাব্যগ্রন্থ, উপন্যাস, ছোটগল্প, শিশুতোষ গল্প ও ভ্রমণ গদ্য রয়েছে। সাহিত্যের প্রায় সব বিভাগে তাঁর নিরলস পদচারণা একজন লেখক হিসাবে বাংলা সাহিত্যের আকাশে তিনি সমুজ্জ্বল নক্ষত্র বটে।
বিশেষ করে আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়ার বেশ কিছু দেশে একাধিকবার ভ্রমণের বিরল দৃষ্টান্ত তাঁর ঝুলিতে আছে। ফলে তিনি বিশ্বের বিখ্যাত স্থানগুলো নিজের চোখে দেখে তাঁর বিস্তারিত লিখে ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য একটি গাইড হিসেবে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছেন। যারা বিভিন্ন দেশ ভ্রমণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত, তারাও ঘরে বসে বিশে^র বিভিন্ন দেশের বিখ্যাত ব্যক্তি ও স্থানসমূহের নির্ভুল সচিত্র তথ্য “ইউরোপের নানা দেশে” বইটিতে পাবেন। যেহেতু ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য, প্রাচীন পুরাকৃর্তি, দর্শনীয় স্থানগুলো ইতিহাসের ও গবেষণার বিষয়বস্তু হিসেবে বিশ^ স্বীকৃত। সুতরাং লেখক অনেক পরিশ্রম করে তাঁর ভ্রমণের অভিজ্ঞতাগুলো, ঐতিহাসিক পটভূমি, ভ্রমণের সময় ঘটে যাওয়া নানাবিধ সত্য ঘটনা এবং নান্দনিক ও কাব্যিক উপস্থাপন পাঠকদের জ্ঞান আহরণে আনন্দ ও উৎসাহ জোগাবে বলে আমার বিশ্বাস।
পরিশেষে ভ্রমণকাহিনি ইউরোপের নানা দেশে বইটির সবগুলো দেশের বর্ণনা পাঠকগণ বিশদভাবে জানার সুযোগ কাজে লাগাতে সক্ষম হবেন। এছাড়াও বইটি পাঠকের মনের খোরাকের সীমাহীন তৃষ্ণা মেটাতে ও পাঠকপ্রিয়তায় উত্তীর্ণ হবে। সকল পাঠক ও লেখকের জন্য নিরন্তর শুভকামনা। কবি আবুল খায়ের।
জন্ম : কবি, কথাসাহিত্যিক ও পর্যটক ক্যাপ্টেন (অব.) ডা: রাহেলা খুরশীদ জাহান (মঞ্জু) ১৫ নভেম্বর ১৯৫১ইং সালে নওগাঁ জেলার জোয়ানপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পারিবারিক সূত্রে ছোটবেলা থেকেই কবিতা, গল্প এবং গান লেখা ও গাওয়ার প্রতি ছিল প্রচণ্ড অনুরাগ। তাঁর সংস্কৃতিমনা পরিবারের অন্যতম ব্যক্তিত্ব নানা জমিদার করিম বক্স সর্দার ছিলেন একাধারে সাহিত্যিক এবং বেহালার ওস্তাদ। সাহিত্য ও সংস্কৃতির সেই রেশটুকু বংশধারায় আজও বিদ্যমান। পড়ালেখা : রাজশাহী কলেজ থেকে এইচএস সি ১৯৬৯ সালে এবং রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ থেকে ১৯৭৫ সালে এমবিবিএস পাশ করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্নশীপ করেন। পরে ২০০০ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি থেকে পাবলিক হেলথ এ মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। পেশাগত জীবন : ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে (আর্মি মেডিক্যাল কোর) কর্তব্যরত ছিলেন। ক্যাপ্টেন পদে থাকার সময় স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের লিবিয়াতে সরকারী হাসপাতালে মেডিক্যাল অফিসার হিসাবে কর্তব্য পালন করেন। পরবর্তীতে দেশে ফিরে ইউএসএইড, ইউএনএফপিএ-এর বিভিন্ন প্রজেক্টে এবং আরও কিছু এনজিওতে দীর্ঘদিন ন্যাশানাল কন্সালট্যান্ট হিসাবে কাজ করেন। দেশ ভ্রমণ : তিনি আমেরিকা, আফ্রিকা, এশিয়া এবং ইউরোপের অনেকগুলো দেশের উল্লেখযোগ্য স্থানসমূহ একাধিকবার ভ্রমণ করেছেন। তিনি সম্প্রতি মিশরের প্রায় সব উল্লেখযোগ্য স্থান ভ্রমণ করেছেন। সাহিত্যচর্চা : তাঁর রচিত বেশ কিছু গান, কবিতা, গল্প, ভ্রমণকাহিনি, কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা, বেশ কিছু দৈব ঘটনা এবং উপন্যাস রয়েছে, তবে প্রায় সবই অপ্রকাশিত। একটি উপন্যাস ‘খণ্ডিত লয়’ ১৯৯৬ সালে প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের অমর একুশে বই মেলায় সন্ধ্যা তারার নিমন্ত্রণে (উপন্যাস ও গল্প), নীড় ভাঙ্গা ঢেউ (উপন্যাস ও গল্প) এবং ‘জোয়ানপুরের কথা, ইতিহাস ও ঐতিহ্য, পরীর দেশের আয়না, একটি ছোটদের বই এবং কবিতার বই ‘দুদিনের খেলাঘর’ বইগুলি প্রকাশিত হয়েছে। পরে ২০২৩ সালের অমর একুশে বই মেলায় আরও তিনটি বই- মহুয়ার ডায়েরি, মিশরের দিনরাত্রি এবং খণ্ডিত লয় ১ম পর্ব পুনঃপ্রকাশিত হয়েছে। ২০২৫ এর বইমেলায় ‘ইউরোপের নানা দেশে’ এবং ‘মহাদেশ থেকে মহাদেশে’ দুটি ভ্রমণকাহিনি প্রকাশিত। তিনি আজীবন সাহিত্যচর্চায় নিবেদিত থাকতে চান।