রামায়ণ, মহাভারত, গীতা কি তিব্বতীয় লামা ইউৎসুক জি-র বর্ণনা অনুসারে জ্ঞানগঞ্জ মঠ, সিদ্ধবিজ্ঞান আশ্রম, যোগসিদ্ধ আশ্রম ও কিছু গুপ্ত তন্ত্র-আশ্রম নিয়ে এক প্রকৃত মহাশূন্য ক্ষেত্র হল শাংরি-লা খাঁটি বা শান্তালা। সম্ভবত ভারতের অরুণাচল প্রদেশে আর তিব্বত সীমান্তের কাছে অবস্থিত এই রহস্যময় বিশাল উপত্যকা। অনেকে একে 'প্রাচ্যের বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল' বলে থাকেন। এই শাংরি-লা ক্ষেত্র রামায়ণ-মহাভারতে বর্ণিত, প্রচুর সিদ্ধপুরুষদের প্রত্যক্ষদর্শিত এক চতুর্থমাত্রিক শূন্য ক্ষেত্র। আজ অবধি কোনো স্যাটেলাইটও তার প্রকৃত অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি। তা হলে শাংরিলা বা শান্তালা কি অপটিক্যাল ইলিউশন মাত্র? এ গল্প হল সাধারণ জার্নালিস্ট তানিয়া রয়-কে নিয়ে। সে তিব্বতের শাংরি-লা এক্সপিডিশন কভার করার অ্যাসাইনমেন্ট পায় এক বিদেশি চ্যানেলের থেকে। তিব্বতের রাজধানী লাসা পৌঁছোনোর পরই তার সঙ্গে নানা ঘটন-অঘটন ঘটতে থাকে, আর ঠিক সেখান থেকেই শুরু হয় তানিয়া রয়ের অন্যরকম সোলো এক্সপিডিশন। সে অভিযান কখনো ভয়ংকর, আক্রমণাত্মক; কখনো অবিশ্বাস্য, বিস্ময়কর; কখনো আবার এক মহাকাল চক্রের মহাশূন্য ফাঁদ। কিছ প্রাচীন ইতিহাস, বৌদ্ধ, সনাতনী দর্শন, কিছুটা আধ্যাত্বিক আন-উপলব্ধি আর সাধারণ কিছু বিজ্ঞানমনস্ক ব্যাখ্যায় সম্পূর্ণ ভার্চুয়াল দুরস্ত থ্রিলারভিত্তিক অভিযান। সাধারণ ত্রিমাত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে চতুর্থ মাত্রাকে দর্শনের এক কালচক্র ফ্যান্টাসি।
এই থ্রিলার উপন্যাসটি রহস্যময় শাংরি-লা বা শম্ভালায় তানিয়া রায় নামে এক বাঙালি নারীর একক অভিযানের গল্প বলে। তানিয়া পেশায় সাংবাদিক। এই বিপজ্জনক যাত্রায়, প্রতিটি পদক্ষেপ তার জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ, এবং প্রতিটি মুহূর্ত বিশ্বাস এবং অবিশ্বাসের মধ্যে একটি দোদুল্যমানতায় ভরা। এই যাত্রার পথটি একটি ত্রিভুজ গঠন করে, যার একদিকে আধুনিক বিজ্ঞান, দ্বিতীয় দিকে বেদ, ধর্মগ্রন্থ, বৌদ্ধ দর্শন এবং তৃতীয় দিকে তিব্বত ও চীনের প্রাচীন ইতিহাস। আখ্যানের পরিধি ও গভীরতা একে অনন্য উচ্চতায় উন্নীত করেছে।
তিন মাত্রায় বসবাস করে, চতুর্থ-মাত্রিক শাংরি-লা আবিষ্কারের যাত্রা শেষ পর্যন্ত আত্ম-অন্বেষণ এবং আত্ম-উপলব্ধির গল্পে পরিণত হয়, শাংরি-লা নিজেই বুঝতে পারে।