বাংলা ভাষায় ভূতের গল্প লেখা হয়েছে অজস্র। থ্রিলারও। কিন্তু লেখকের মায়াকলমে স্নেহাতুর জীবনের পরতে পরতে মাখানো মায়া আর মোহের ভেতর, কান্না আর কাঞ্চনের ভেতর, অমোঘ অচ্ছেদ্য ভালোবাসার ভেতর এমন হাড় কাঁপানো ভৌতিক থ্রিলারের স্বাদ বাঙালি পাঠক শেষ কবে আস্বাদন করেছেন আমাদের জানতে সাধ জাগে। এই সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় গল্পকার রজতশুভ্র মজুমদারের ‘বারোটি ভয়াবহ ভৌতিক থ্রিলার’ সন্দেহাতীতভাবেই বহুপ্রসূত ভূতের গল্প বা থ্রিলারের চিরাচরিত ধারায় এক শিল্পিত আলো ঠিকরানো বৈদূর্যমণির মতো ব্যতিক্রমী সংযোজন।
"পুতুলটাকে কেউ অশ্রদ্ধা বা অসম্মান করলে তার জীবনে নেমে আসে ভয়াবহ অভিশাপ! ", অনির্বাণজ্যোতি একটু চুপ করে থেকে বললেন, "একটা অলৌকিক শক্তি আছে পুতুলের মধ্যে। বুঝেছ?"
"ধুস! এরকম আবার হয় নাকি?" হো হো করে হেসে ওনার দিকে তাকিয়ে সমস্ত দাবি ফুৎকারে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন আরণ্যক সেন।
সঙ্গে সঙ্গে তাঁর মনে হল, এভাবে হাসাটা মনে হয় উচিত হল না। অনির্বাণজ্যোতি কি তবে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন? ডাক্তারি ছেড়ে তিনি কি এখন সারাদিন পুতুলের সেবা করেন বাড়ীতে বসে? পুতুলকে স্নান করান, খাওয়ান, পোশাক বদলে দেন! সত্যিই মানুষের কি ভয়ানক পরিণতি।
অনির্বাণজ্যোতি বললেন, "যখনই ওর প্রতি অবহেলা হচ্ছে, এই যেমন ধরো কোনদিন হয়তো পোশাক বদলাতে ভুলে গেলাম, বা হয়তো ওর পছন্দের খাবার দিতে পারলাম না, ওর মুখের চেহারাটাই বদলে যায়। মাঝরাতে পাশের ঘরের দেওয়ালে জোরে জোরে মাথা ঠোকার আওয়াজ পাই। কখনো চিৎকার করে কাঁদে, কখনো বা অট্টহাসি হাসে ওই পুতুল"।
রজতশুভ্র মজুমদার( ২ জানুয়ারি, ১৯৭৮) ওপার বাংলার তরুণ প্রজন্মের জনপ্রিয় কবি ও কথাশিল্পী। কবিতা ও গদ্য সাহিত্যে ইতিমধ্যে তাঁর ১৭টি বই প্রকাশিত যার বেশিরভাগই বিভিন্ন সময় 'বেস্ট সেলার' তালিকার অন্তর্ভুক্ত। এ বছর অমর একুশে মেলায় সময় প্রকাশনী থেকে আসছে তাঁর একটি উপন্যাস ও একটি গল্পসংগ্রহ। এই উপন্যাস এবং গল্পসংগ্রহের একাধিক গল্পের চলচিত্রায়ণের কাজ চলছে বলিউড ও টলিউডে। প্রখ্যাত আবৃত্তিশিল্পীদের কণ্ঠে রজতশুভ্রর কবিতা নিয়মিত শোনা যায় আকাশবাণী ,দূরদর্শন ও বিভিন্ন মুক্ত মঞ্চে। বস্তুত, জয় গোস্বামী , সুবোধ সরকারের পর আর কোনো কবির কবিতা নিয়েই এত বেশি অডিও-ভিডিও-সিনেমাটোগ্রাফির কাজ হয়নি। দেশ পত্রিকার নিয়মিত লেখক রজতশুভ্র দেশে বিদেশে আমন্ত্রিত হয়ে নিজের কবিতা পাঠ করেন।