জীবনানন্দ দাশ (১৮৯৯-১৯৫৪) বলেছিলেন, সকল দেশের সাহিত্যেই দেখা যায় একজন শ্রেষ্ঠতম কবির কাব্যে তার যুগ এমন মানবীয় পূর্ণতায় প্রতিফলিত হয় যে সেই যুগের ইতস্তত বিক্ষিপ্ত পথে যেসব কবি নিজেদের ব্যক্ত করতে চান, ভাবে, ভাষায়, কবিতা, ইঙ্গিতে বা নিহিত অর্থে সেই মহাকবিকে এড়িয়ে যাওয়া তাদের পক্ষে দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়। রবীন্দ্রনাথের মূল্যায়ন প্রসঙ্গেই জীবনানন্দ এই মন্তব্য করেছিলেন। আজ আমরা নিঃসংশয়ে বলতে পারি বিংশ শতাব্দীতে যে মুষ্টিমেয় সাহিত্যিকের হাতে বাংলা কাব্য, ছোটগল্প, উপন্যাস এবং সাহিত্যচিন্তা সমৃদ্ধ হয়েছে জীবনানন্দ দাশ তাদের মধ্যে সর্বাগ্রগণ্যদের একজন।
জীবনানন্দ দাশ বাংলা ভাষার প্রধানতম আধুনিক কবি। কেবল তা-ই নয়, তিনি লিখেছেন ১২৮টি ছোটগল্প ও ১৯টি উপন্যাস এবং বেশ কিছু প্রবন্ধ-নিবন্ধ। তাঁর কবিতাভাস্কর্য আমাদের কাছে পরম বিস্ময়। তার গদ্য অনন্যসাধারণ। তার জীবনোপলব্ধি আমাদের বোধ ও বোধিকে আপ্লুত করে। জীবদ্দশায় তিনি প্রকাশ করেছেন সামান্য। তাঁর সহস্রাধিক কবিতা এবং অনেক উপন্যাস ও ছোটগল্প পঠিত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
কবি, কথাসাহিত্যিক, প্রবন্ধকার এবং সর্বোপরি মানুষ জীবনানন্দ দাশকে নিয়ে শ্রেষ্ঠ কয়েকটি রচনা এই গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে। যারা লিখেছেন তারা সকলেই দেশে-বিদেশে জীবনানন্দ বিশেষজ্ঞ হিসেবে সমাদৃত। এই রচনাগুলোতে বহুকৌণিক বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে জীবনানন্দ দাশের কবিতা, উপন্যাস ও প্রবন্ধ-নিবন্ধের স্বরূপ উদ্ঘাটিত হয়েছে।
কথাপ্রকাশ কবি জীবনানন্দ দাশের নানা গ্রন্থ প্রকাশ করে চলেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মূল পাণ্ডুলিপি অনুসরণপূর্বক সংকলিত ‘জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ প্রবন্ধ’। আরেকটি উল্লেখযোগ্য প্রকাশনা হলো ‘পাণ্ডুলিপি চিত্রসহ জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা’।
জন্ম: ৩ জুন, ১৯৫৯, বাংলাদেশের অন্যতম অর্থনীতিবিদ ও সাহিত্যিক। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়াও, তিনি অর্থনীতি, ব্যবস্থাপনা ও অপারেশানস্ও বিজনেস রিসার্চ ইত্যাদি বিষয়ের অধ্যাপক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ১৯৮১ স্নাতক ও ১৯৮৩ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে অস্ট্রেলিয়ার মনাশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেন এবং ১৯৯৭ সালে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সে অধ্যয়ন করেছেন। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার ডিকিন বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি কিছু সময়ের জন্য পাবলিক পলিসি অধ্যয়ন করেন। তিনি ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে (বিসিএস ১৯৮২ ব্যাচ) যোগ দেন। অতঃপর সরকারের কর্মকর্তা হিসেবে তিনি দেশে-বিদেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে কাজ করেছেন। একই সঙ্গে বিশ্বব্যাংক ও আংকটাডের পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৩ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত তিনি কূটনৈতিক পদে বেলজিয়াম, সুইজারল্যাণ্ড ও লুক্সেমবুর্গ এ দায়িত্ব পাল করেছেন। ২০১৪ সাল থেকে অদ্যাবধি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় কার্যরত রয়েছেন। সাহিত্য গবেষণা তাঁর প্রিয় ক্ষেত্র। তিনি জীবনানন্দ দাশের কবিতা ও অন্যান্য রচনা নিয়ে প্রায় তিন দশক যাবৎ গবেষণা করে চলেছেন। জীবনানন্দ দাশের কবিতা ইংরেজিতে অনুবাদ এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেয়ার ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছেন। তিনি জীবনানন্দ দাশের স্বহস্তে লিখিত পাণ্ডুলিপির ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থের সঠিক পাঠ নিরূপণ করেছেন। বিশেষ করে রূপসী বাংলা কাব্যগ্রন্থের বর্জিত অংশ পুনরূদ্ধার করেছেন ও সম্পাদক কর্তৃক সংযোজিত শব্দাবলী বর্জন করে বিশুদ্ধ পাঠ তৈরী করেছেন। ২০১৪ সালে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর গবেষণা প্রতিবেদন ‘চটি সাহিত্যের পূর্ব পশ্চিম’। বর্তমানে তিনি বাংলা সাহিত্যের অভিধানে অসংকলিত শব্দ নিয়ে গবেষণা করছেন।