আমাদের সমাজের অনেক নারী তাদের গায়ের রঙের কারণে হীনমন্যতায় ভোগে। তার উপর বাড়তি পাওনা হিসেবে আশেপাশের মানুষের বাজে কথা তো আছেই। পারিসাও ভেবেছিল তার মতো সাধারণ মেয়ের জীবনে প্রেম আসবে না; কিন্তু এলো বর্ষার প্রথম প্রেম। কিশোরী বয়সের ভালো লাগা প্রেমে গড়ায়।
পারিসাদের প্রতিবেশী শার্লক। মাঝে মধ্যে দেখা হলেও কথা হতো না তেমন। শার্লক আচমকা একদিন পারিসাকে প্রপোজ করে। পারিসাও সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়। চিঠি দেওয়া নেওয়া, টেলিফোনে কথা বলা চলতেই থাকে। গল্পটা পারিসার প্রেমকে কেন্দ্র করে হলেও তাতে রয়েছে আরও রং-বেরঙের ঘটনা। যা তাসমি কিংবা নম্রতার জীবনের সাথে জড়িয়ে আছে।
সর্বোপরি গল্পটা প্রেমের, প্রথম বর্ষার প্রেম। আচ্ছা বর্ষার প্রথম প্রেম কি অমর হয়?? জানতে হলে পড়তে হবে "কঠিন তোমাকে ছাড়া একদিন" বইটি।
সহজ, সাবলীল ভাষায় উপন্যাসের ঘটনা প্রবাহ এগিয়েছে। লেখকের লেখা ঝরঝরে, প্রানবন্ত।
তবে শেষটা কি হবে তা আমি আগেই অনুমান করেছিলাম কিছুটা আর অনুমান সঠিকও হয়েছে। পারিসার জন্মদিনের সারপ্রাইজও অনুমান করেছিলাম। তার থেকেও বড় কথা শেষটা লেখকেরই একটা অণুগল্পে পড়েছিলাম; তার সাথে অনেকটা মিল রয়েছে শেষের দিকে। একটা গল্পের সাথে অন্য গল্পের মিলে যাওয়াটা ভালো লাগে না। কাহিনীটা সাদামাটা, তবে লেখকের লেখার মুন্সিয়ানা রয়েছে। নব্বইদশকের চিঠি দেওয়া-নেওয়ার বিষয়টি সত্যিই দারুণ! পারিসার চরিত্রটি ভালো লেগেছে।
বইয়ের সবচেয়ে মিষ্টি ব্যাপার হচ্ছে, চরিত্রগুলোর (বিশেষ করে পারিসার) বইয়ের প্রতি আলাদা একটা ভালোবাসা।
বইটা নিয়ে আমি অনেক বেশিই উদগ্রীব ছিলাম; কিন্তু পড়ার পর ততটা আনন্দিত হতে পারিনি। আপুর বইগুলো অনেক দারুণ হয় তাই হয়তো আশাটা বেশিই ছিল। তবে এটা একান্তই আমার ব্যাক্তিগত মতামত। এছাড়া গল্পে ছোট-খাটো কিছু অসঙ্গতি ছিল। কিছু জায়গায় দুরিন আবার কিছু কিছু জায়গায় ডুরিন ছিল।
তবে বইটা রেকমেন্ড করাই যায়। কারণ লেখকের লেখার ধরন সুন্দর।
পড়ে দেখতে পারেন, ভালো লাগবে৷ গল্পের শেষে টুইস্ট আছে, যা আপনাকে চমকে দিতে পারে!
জন্ম ১১ ডিসেম্বর। জন্মভূমি ফরিদপুর হলেও বেড়ে উঠেছেন রাজধানী ঢাকায়। পড়াশােনা করেছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজ এ এম,বি,বি,এস পাশ করেছেন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ থেকে স্নাতকোত্তরে ‘জনস্বাস্থ্য বিষয়ে পড়াশােনা করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এর অন্তর্গত প্রতিষ্ঠান নিপসম থেকে। সুস্মিতা পছন্দ করেন। নতুন কিছু শিখতে এবং নানান রকম শৌখিন কাজ করতে। যুক্ত আছেন শিশু বিষয়ক সচেতনতা ও উন্নয়নে কর্মরত প্রতিষ্ঠান- ‘চাইল্ড সেন্ট্রিক ক্রিয়েটিভ সেন্টার এর সাথে মাত্র ৬ বছর বয়সে হােমওয়ার্ক খাতায় টুকটাক গল্প আর ছড়া লেখার সূত্রপাত। ১৯৯৯ সালে দৈনিক ইত্তেফাক এর ‘কচিকাঁচার আসর’ এ প্রথম ছড়া এবং একই বছর দৈনিক প্রথম আলাে’র ‘গােলাছুট' এ প্রথম গল্প প্রকাশিত হয়। ২০০৭-১২ সালে ছড়া-কবিতা, গল্প মিলিয়ে প্রায় ৫০ এর অধিক লেখা দৈনিক পত্রিকা, রহস্যপত্রিকা, কিশাের তারকালােকসহ অন্যান্য মাসিক ম্যাগাজিনে প্রকাশ হয়েছিল। ২০১২ সালে দৈনিক সকালের খবর ‘ভালােবাসা দিবস সংখ্যায় তার হঠাৎ ভালােলাগা গল্পটা প্রথম স্থান অধিকার করে নেয়। ভালােবাসেন সমসাময়িক এবং হরর গল্প লিখতে। এ পর্যন্ত তার লেখা মােট গল্পের সংখ্যা ৬০ এর ওপরে। তার লেখা প্রথম বই- ‘সােয়েটার প্রকাশিত হয়। পরিবার পাবলিকেশন্স থেকে ২০২০ সালে।