ঘুম পাতলা হয়ে আসছে। মানুষটি এখন সেই সন্ধিক্ষণে—জেগেও উঠতে পারে, আবার গভীরে তলিয়েও যেতে পারে। অস্থির দৃষ্টিগোলক জানান দিচ্ছে, সে স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু এটা কি দুঃস্বপ্ন? উঁহু। কারণ দুঃস্বপ্নে স্বপ্নকন্যা আসে না।
তার সারা শরীর কাঁপছে মোহময় উত্তেজনায়। উষ্ণ, পেলব ঠোঁট, আর নিখুঁত ছন্দে দুলতে থাকা স্বপ্নকন্যার কোমলতম স্পর্শ —সমস্ত অনুভূতি তাকে স্বর্গের সপ্তম স্তরে তুলে দিচ্ছে। এ সুখ যেন অতীন্দ্রিয় কিছু...তার শরীরের প্রতিটি স্নায়ু শিহরণে মোচড় দিচ্ছে, পুলকের ঢেউ তুঙ্গে পৌঁছেছে।
হঠাৎই স্বপ্নকন্যার কোমরের নিখুঁত বাঁকটায় চেপে ধরতেই তার আঙুলগুলো কিছু অস্বাভাবিক স্পর্শ পায় — শীতল, এবড়োখেবড়ো, অদ্ভুত চটচটে কিছু! বিকৃত, অবর্ণনীয় এক অনুভূতি! স্বপ্নকন্যা তখনও তার ওপরে, নিঃশ্বাসে এক অদ্ভুত মাদকতাময় গন্ধ।
ঠিক সেই মুহূর্তে মানুষটির মুখ থেকে এক বিকট আতংকের আর্তনাদ ছিটকে আসে।
আফসোস! বন্ধ দরজার ওপাশে তার স্ত্রী তখন বুঁদ হয়ে ডুবে আছে নেটফ্লিক্স-এর পর্দায় চলতে থাকা ‘মিরর অফ আ নিম্ফোম্যানিয়াক’ এ।
শুরুতেই একটা কথা বলে নেয়া দরকার। এই বইটা ডার্ক মিথলজিক্যাল ফ্যান্টাসি ঘরানার থ্রিলার; লেখা হয়েছে প্রাপ্তবয়স্ক এবং প্রাপ্তমনস্ক পাঠকের জন্য।
প্রাপ্তবয়স্ক ব্যাপারটা বোঝা খুব সহজ। কিন্তু প্রাপ্তমনস্ক কেন?
এই বইটার প্লট মানুষের আদিমতম এবং নিষিদ্ধতম একটি অনুভুতি নিয়ে যে সর্বকালীন ট্যাবু। কিন্তু যতই শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করা হোক না কেন এটি আমাদের গোপনতম রন্ধ্রপথে আমৃত্যু চলছে, চলবেও। এই কাহিনীর প্রোট্যাগনিস্ট সুরাইয়া বা শায়লা সেটারই প্রতিভূ। তাদের অনুভূতি, কর্মকান্ড, এবং চিন্তাধারা ঠিকমতো বুঝতে হলে হলে পাঠককে তাই প্রাপ্তমনস্ক হতেই হবে। নইলে এই কাহিনীটা তাকে উল্টোভাবে ধাক্কা দিতে পারে।
বইটা লেখা হয়েছে একটা মিথকে উপজীব্য করে। খুব অদ্ভুত একটা মিথ। শুরুতেই বলা খন্ডাংশটুকুতে সেই মিথের ছোঁয়া খুব হালকা করে এসেছে। তাই বইটা পড়তে হবে সম্পূর্ণটা জানতে।