‘গল্পগুলোর মন ভালো নেই’-গল্প সংকলন প্রকাশ করতে পেরে আমরা আনন্দিত। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এমন একটি আয়োজনে ভিন্ন স্বাদ ও মানের ৩২টি গল্প গ্রন্থভুক্ত করা হয়েছে। যেকোনো প্রতিযোগিতা মানেই টানটান উত্তেজনা। ‘পুষ্পধারা-বাংলানামা গল্প লেখা প্রতিযোগিতা’য় অংশগ্রহণকারী তিন শতাধিক লেখকের মধ্যেও এই উত্তেজনার কমতি ছিল না! আমরা লেখকদের অংশগ্রহণ; প্রতিযোগিতা ঘিরে আগ্রহ-উদ্দীপনায় প্রাণিত হয়েছি। একেকজনের গল্প একেকটি প্লটের; একেকটি অজানা-অচেনা দিগন্তের উন্মোচন যেন! তাই সুচারুরূপে বিচারকার্য সম্পন্ন করা ছিল বেশ কঠিন।
দীর্ঘসময় নিয়ে অত্যন্ত যত্নসহকারে পুরো কাজটির সমন্বয় করেছেন প্রতিযোগিতার প্রধান সমন্বয়ক কবি-প্রাবন্ধিক-গল্পকার ও সাংবাদিক মোহাম্মদ নূরুল হক। বিজয়ী লেখকদের প্রতিটি গল্প সম্পাদনা সূত্রে আমি একাধিকবার পড়েছি, প্রতিষ্ঠিত লেখক যেমন আছেন; তেমনি তুলনামূলক তরুণ লেখকদের ছোটগল্পও এখানে ঠাঁই পেয়েছে। বাংলাদেশের ছোটগল্পের বর্তমান ধারাকে ঋদ্ধ করছে ও পূর্ণতা দিচ্ছে এসব গল্পকারের অনেকেই। এ সূত্রে আরেকটি বিষয় বলতে চাই-এই আয়োজনের মাধ্যমে নতুন-তরুণ লিখিয়েদের স্বতন্ত্র বই প্রকাশের আগে পাঠকের সঙ্গে তাদের লেখার পরিচয় ঘটিয়ে দেওয়াও আমাদের আয়োজনের অন্যতম উদ্দেশ্য। একজন তরুণ লেখক এই বইয়ের মাধ্যমে সমকালীন গুরুত্বপূর্ণ লেখকের লেখার সঙ্গে পরিচত হতে পারবেন। এতে লেখকদের নিজেদের সম্পর্ক সুদৃঢ় হবে; ভাবনার আদান-প্রদান হবে। ভিন্ন স্বাদের ও প্লটের গল্পগুলোর মন ভালো হয়ে যাবে; যদি পাঠক পড়ে আনন্দ পান; রস আস্বাদন করতে পারেন, আমাদের শ্রমও সার্থক হবে তখন। আমরা চেষ্টা করেছি যথাসাধ্য বাক্য ও বানানের অসঙ্গতি দূর করতে; তারপরও কিছু বিচ্যুতি থেকেছে। পাঠক নিজগুণে ক্ষমা করবেন। পরবর্তী সময়ে ত্রুটি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা থাকবে।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী প্রত্যেককে আন্তরিক অভিবাদন ও শুভেচ্ছা। পুষ্পধারা প্রপার্টিজ লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান (শাশ্বত মনির), বাংলানামার প্রধান নির্বাহী কবীর আলমগীরসহ প্রতিযোগিতার বিভিন্ন পর্যায়ে সংশ্লিষ্টদের প্রত্যেকের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা।
২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বাংলানামা প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ লেখক; নবীনদের যাত্রাপথ নির্মাণে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আসছে; যাদের লেখার মাধ্যমে বাংলাদশের সাহিত্য-সংস্কৃতি বিশেষভাবে সুনির্মিত হবে। ‘সব পাঠকের বই; বাংলানামার বই’এই আপ্তবাক্য ধারণ করে আমরা পরবর্তী সময়ে নিয়মিত এ ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজনসহ সংকলন প্রকাশে সচেষ্ট থাকবো। লেখক-প্রকাশক-পাঠকের মেলবন্ধনে গড়ে উঠুক বইমুখী সমাজ; মঙ্গল হোক সবার।
Hossain Shohid Majnu ছোটগল্পকার, কবি হোসেন শহীদ মজনুর প্রধান পরিচয়– তিনি সাংবাদিক। পেশায় সাংবাদিক হলেও প্রথম নেশা- লেখালেখি। ২০০৯ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'প্রতিধ্বনি কমরেড' প্রকাশিত হয়। এরপর ২০১১ সালে প্রকাশিত হয় গল্পগ্রন্থ 'ভূত অথবা ভবিষ্যতের গল্প'। যৌথ সম্পাদনায় 'ভাষাচিত্র নির্বাচিত ছোটো গল্প' বের হয় ২০১৯ সালে। ২০২০ সালে তার সম্পাদিত 'ছোটদের মজার মজার ভূতের গল্প' শিশু-কিশোরদের মধ্যে সাড়া ফেলে। সম্পাদনা করছেন ছোটোকাগজ বাংলানামা। এছাড়াও তিনি দেশের প্রায় প্রতিটি জাতীয় দৈনিকেই অনিয়মিতভাবে লেখালেখি করেন। লেখকের দ্বিতীয় নেশা- ভিজ্যুয়াল মিডিয়া। সেজন্যই চলচ্চিত্র নির্মাণকাজে জনপ্রিয় অভিনেতা-পরিচালক তৌকীর আহমেদের সহকারী পরিচালক হিসেবে যুক্ত ছিলেন প্রায় এক বছর। দেশের একাধিক জাতীয় দৈনিক ও অনলাইনে সাংবাদিকতার পাশাপাশি ড. কাজল রশীদ শাহীনের রচনা ও নূরুল আলম মিল্কীর পরিচালনায় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক ‘লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে’ সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এ নাটকে ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয়ও করেন তিনি। একই লেখক ও পরিচালকের ‘বৈদেশী’ নামের আরেকটি টিভি নাটকেও সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় যুগ্ম বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন হোসেন শহীদ মজনু। লেখকের জন্ম ১৯৭৫ সালের ১৩ মে কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ঠোটারপাড়া গ্রামে। বাবা বদরুদ্দোজা বিশ্বাস ও মা জাহানারা খাতুনের ৬ সন্তানের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। ২০০৭ সালের ১৫ অক্টোবর সাবিকুন্নাহার রীতার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির দুটি সন্তান– বড় মেয়ে শাহরীন মেধা ও ছেলে শাহনাম স্নিগ্ধ। সাংবাদিকতা, লেখালেখি ও সম্পাদনা করেই বাকি জীবন কাটিয়ে দিতে চান; কারণ তার ধারণা এসব ছাড়া অন্য কোনো কাজ তিনি তেমন পারেনও না!