মনে করুন তো, কোনো এক রাতে ঘুম ভেঙে উঠে বুঝতে পারলেন আপনাকে খুন করা হচ্ছে। না, আগেই ভয় পাওয়ার দরকার নেই, ভয়ের কিছু তো এখনো শুরুই হয় নি। খুনের প্রসেসটা একটু জটিল। সাধারণভাবে ছুরি মেরে বা গুলি করে খুনের কেস না এইটা। কল্পনা করতে থাকুন, প্রথমে কোনো একটা ড্রাগস দিয়ে আপনার শরীরকে নিস্তেজ করে দেয়া হয়েছে। এরপর ঘোলাটে চোখে আবিষ্কার করলেন, আপনার এক একটা হাত পা আপনার শরীর থেকে টেনে খুবলে ছিঁড়ে আলাদা করছে খুনী। কেমন অনুভব করবেন তখন আপনি? কি মনে হবে, যে চোখের সামনে জীবন্ত নরক যেন এসে হাজির হয়েছে?
আর ঠিক এমনটাই ঘটেছিল ডেরেক নিকোলসনের সাথে। ষাটোর্দ্ধ এই বৃদ্ধকে সারারাত টর্চারের পর জীবন্ত অবস্থায়ই তার দেহ থেকে হাত পা সব কেটে আলাদা করে টুকরো টুকরো করা হয়েছে। আর সবথেকে বিভৎস ব্যাপার হলো, খুনী তার কাজ শেষে ভিক্টিমেরই হাত, পা, মাংসের দলা দিয়ে দুমড়ে মুচড়ে অদ্ভুত এক ভাস্কর্য বানিয়ে রেখে গিয়েছে ভিক্টিমের ধারে। নৃশংস এই খুনের তদন্তের ভার পড়ে হোমিসাইড ডিটেক্টিভরবার্ট হান্টারের ঘাড়ে। সহকর্মী কার্লোস গার্সিয়াকে নিয়ে তদন্তে নেমে পড়েন তিনি। অন্তহীন এই গোলকধাঁধার কিছু বুঝে উঠার আগেই খুনী তার দ্বিতীয় আঘাত হানে। এবার আরো বিভৎসভাবে খুন হন লস এঞ্জেলস পুলিশ ডিপার্টমেন্টের রিটায়ারড একজন পুলিশ অফিসার। খুনের পর ঘটনাস্থলে একই রকমের এক ভাস্কর্য পাওয়া যায়। এই ভাস্কর্য দিয়ে হান্টারদের উদ্দেশ্যে নতুন এক বার্তা দিয়ে যায় খুনী, তার শিকার এখনো শেষ না। আরো আঘাত হানা বাকি তার। পর পর দুটো খুনের পরও এদিকে হান্টার আর গার্সিয়া যখন রহস্যের অন্ধকারে নিমজ্জিত, ওদিকে তখন খুনী প্রস্তুতি নিচ্ছে তার সর্বশেষ মাস্টারমাইন্ড প্ল্যান বাস্তবায়নের জন্য। সময় ফুরিয়ে আসছে। খুব দ্রুতই খুনী তুলির শেষ আঁচড় বসাবে....এরপর আর কিছুই করার থাকবে না হান্টারের......।
ইটালীয় বংশোদ্ভূত ক্রিস কার্টারের জন্ম ব্রাজিলে। ইউনিভার্সিটি অভ মিশিগানে সাইকোলজি ও ক্রিমিনাল বিহেভিয়র নিয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। মিশিগান স্টেট ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নির ক্রিমিনাল সাইকোলজি টিমের সদস্য হিসাবে অসংখ্য অপরাধীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কার্টার, যাদের মধ্যে রয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত সিরিয়াল কিলারও। উনিশ শ' নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে লস এঞ্জেলেসে চলে আসেন তিনি। সুদীর্ঘ প্রায় এক দশক অনেকগুলো রক ব্যান্ডে গিটারিস্ট হিসাবে কাজ করার পর, ফুলটাইম উপন্যাস লিখবেন বলে বিদায় জানান সঙ্গীতাঙ্গনকে। বর্তমানে লন্ডনে বাস করছেন কার্টার। বেস্টসেলিং 'দ্য ক্রুসিফিক্স কিলার'-এর পর 'দি এক্সিকিউশনার' রবার্ট হান্টার সিরিজের দ্বিতীয় উপন্যাস।