"যে গল্পের শেষ নেই" - দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় রচিত একটি গ্রন্থ। প্রচ্ছদ এবং লেখকের নাম থেকে এটি স্পষ্ট যে বইটি জ্ঞানভিত্তিক বা শিক্ষামূলক সাহিত্য ঘরানার অন্তর্ভুক্ত। দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন একজন প্রখ্যাত ভারতীয় মার্কসবাদী দার্শনিক এবং নাস্তিক। তাঁর রচনা সাধারণত ইতিহাস, দর্শন এবং বিজ্ঞান বিষয়ক গভীর আলোচনা সমৃদ্ধ থাকে।
প্রচ্ছদে বিভিন্ন সময়ের মানব ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের চিত্রায়ণ দেখা যাচ্ছে। যেমন - প্রাচীন প্রস্তর যুগের মানুষ, হাতিয়ার তৈরি, গুহাচিত্র, পশুপালন, চাকার আবিষ্কার ইত্যাদি। এই ছবিগুলো ইঙ্গিত দেয় যে বইটি মানবজাতির দীর্ঘ পথপরিক্রমা এবং ক্রমবিকাশের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করে।
বইটিতে সম্ভবত নিম্নলিখিত বিষয়গুলো স্থান পাবে:
মানবজাতির উৎপত্তি ও বিবর্তন: একদম আদিম যুগ থেকে আধুনিক সভ্যতা পর্যন্ত মানুষের শারীরিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিবর্তনের ধারা।
প্রাগৈতিহাসিক যুগ: প্রস্তর যুগ, ধাতু যুগ এবং সেই সময়ের মানুষের জীবনযাত্রা, হাতিয়ার, শিল্পকলা ও সমাজ ব্যবস্থা।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্রমবিকাশ: বিভিন্ন যুগে মানুষের আবিষ্কৃত গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানের অগ্রগতি কিভাবে মানব সমাজকে প্রভাবিত করেছে।
সভ্যতার উত্থান ও পতন: প্রাচীন সভ্যতাগুলোর জন্ম, বিকাশ এবং পতনের কারণসমূহ।
দর্শন ও চিন্তাধারার বিবর্তন: বিভিন্ন সময়ে মানুষের বিশ্বাস, মূল্যবোধ এবং দার্শনিক চিন্তার পরিবর্তন।
"যে গল্পের শেষ নেই" শিরোনামটি সম্ভবত মানবজাতির অগ্রগতির অনন্ত ধারা এবং জ্ঞানের অসীমতাকে নির্দেশ করে। দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের গভীর জ্ঞান এবং যুক্তিবাদী দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে বইটি মানব ইতিহাসের একটি বস্তুনিষ্ঠ ও বিশ্লেষণধর্মী চিত্র পাঠকদের সামনে তুলে ধরবে। এটি ইতিহাস, বিজ্ঞান এবং দর্শনের আগ্রহী পাঠকদের জন্য একটি মূল্যবান গ্রন্থ।
Debiprasad Chattopadhyaya (জন্ম: ১৯ নভেম্বর, ১৯১৮ - মৃত্যু: ৮ মে, ১৯৯৩) ভারতের একজন প্রখ্যাত মার্কসবাদী দার্শনিক। তিনি প্রাচীন ভারতের দর্শনের বস্তুবাদকে উদ্ঘাটন করেছেন। তার সবচেয়ে বড় কাজ হল লোকায়তের প্রাচীন দর্শনকে তিনি বিরুদ্ধপক্ষের বিকৃতি হতে রক্ষা করেন এবং তা সংগ্রহ ও প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও তিনি প্রাচীন ভারতের বিজ্ঞানের ইতিহাস ও বিজ্ঞানের পদ্ধতি সম্পর্কেও গবেষণা করেছেন বিশেষ করে প্রাচীন চিকিৎসক চরক ও শ্রুশ্রুত সম্পর্কে।