এ গ্রন্থে যেসব বৈশিষ্ট রয়েছে:
ক. সাধারণভাবে এ কিতাবটি সকল শ্রেণীর পাঠকদের জন্য। তবে স্বল্পশিক্ষিতদের উদ্দেশ্যে সেরূপ ভাষা প্রয়োগে এটি গ্রন্থনা করা হয়েছে। বিশেষভাবে স্কুল মাদ্রাসা পড়ুয়া ও কুরআনের হিফয সম্পন্নকারী যেসব শিক্ষার্থী অর্থ বুঝে কুরআন অধ্যয়নে আগ্রহী তারা আমার এ তাফসীর গ্রন্থের প্রধান লক্ষ্য।
খ. এটা বড় কোনো তাফসীর গ্রন্থ নয়; বরং তাফসীর অধ্যয়নের সূচনা পর্ব বা প্রাথমিক প্রস্তুতিক্ষেত্র মাত্র। এখানে তাফসীর যতটুকু করা হয়েছে তা এতই সংক্ষিপ্ত, যাতে করে শব্দের অর্থ বুঝে ও আয়াতের মর্মটা উপলব্ধি করে কুরআন অধ্যয়ন করতে পারে।
গ. কুরআনের শব্দার্থ জানাকে এখানে অতীব গুরুত্বের সাথে দেখা হয়েছে। কেননা, আয়াত ও শব্দের অর্থ জানা না থাকলে কুরআন কারীমের প্রকৃত মর্ম উপলব্ধি হয় না। সে মর্ম ফুটিয়ে তুলতে এখানে ঠিক সেভাবে অনুবাদ ও শব্দার্থ প্রদান করা হয়েছে।
ঘ. অনুবাদ সহজ করার জন্য আয়াতগুলোকে খন্ড খন্ড করে ছোট ছোট বাক্যে ভাগ করে তরজমা করা হয়েছে। আল্লাহ নিজেও বলেছেন, “আমি অবশ্যই কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য। সুতরাং উপদেশ গ্রহণের কেউ আছে কি?” (সূরা আল ক্বামার:২২)।
ঙ. আয়াতের অস্পষ্টতা দূর করে বিষয়টিকে অধিকতর সহজ ও বোধগম্য করার জন্য প্রথম বন্ধনিতে ভাবার্থ ব্যাখ্যামূলক অনুবাদ ও মর্মার্থ এবং ক্ষেত্রবিশেষে তৃতীয় বন্ধনিতে অতি সংক্ষিপ্ত তাফসীর করা হয়েছে।
চ. আয়াতের ভেতরে আমি, তুমি, সে, তাকে, তারা, তাদের-এ ধরণের “দমীর” তথা সর্বনাম পদ দ্বারা কাকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে, অনুবাদে (বন্ধনীর ভিতরে) তা স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে।
ছ. আয়াতগুলোর শাব্দিক তরজমার বদলে এগুলোর মর্মানুবাদ করা হয়েছে।
জ. অনেক ক্ষেত্রেই এক আয়াতের তাফসীরে প্রাসঙ্গিক অন্যান্য আয়াতের উদ্ধৃতি নির্দেশিকা দেয়া হয়েছে শুধু সূরার নাম্বার ও আয়াত নাম্বার দিয়ে। যেমন সূরা বাকারার ২৫৫নং আয়াত। এটা লিখা হয়েছে (২:২৫৫) অর্থাৎ ২ নং সূরার ২৫৫ নং আয়াত। অনুরূপ (৩:৭০)-এর অর্থ ৩ নং সূরা আল ইমরানের ৭০ নং আয়াত, এভাবে আয়াত নির্দেশিকা দেয়া হয়েছে। এতে একজন শিক্ষার্থী প্রাসঙ্গিক আয়াতগুলো অধ্যয়ন করলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আরও পরিষ্কার ধারণা নিতে পারবেন।
ঝ. যেসব আয়াত একেবারেই স্পষ্ট ও বোধগম্য সেসব আয়াতের ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়নি।
ঞ. যেসব আয়াতের ব্যাখ্যায় হাদীসের উদ্ধৃতি দেয়া হয়েছে সেখানে হাদীস গ্রন্থের নাম উল্লেখ করে ডান পাশে হাদীস নাম্বার দেয়া হয়েছে।
ঞ. ‘আল্লাহ’ ও ‘মুহাম্মাদ'-কে পরস্পর তুমি সম্বোধন করা হয়েছে। অন্যান্য নবীদের ক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছে। তবে, ক্ষেত্র বিশেষে আপনিও ব্যবহার করা হয়েছে।
ট. আল্লাহ যেখানে নিজেকে বহুবচনে 'আমরা' ও 'আমাদের' বলেছেন, সেখানে একবচনে 'আমি ও 'আমার’ অনুবাদ করা হয়েছে।