বারো জন নারী। তাঁদের জীবন ও কাজের প্রেক্ষাপটগুলো ভিন্ন। কেউ এসেছেন জেলা শহরের ‘সাধারণ পরিবার’ থেকে, কারো আগমন জাঁকালো মহানগরের ‘বলার মতো’ পারিবারিক পরিবেশ থেকে। কারো বা ভাষা ও সংস্কৃতিতে আছে ভিন্নতা। তাঁদের মধ্যে আছেন কলেজ শেষ করে জীবনযুদ্ধে সামিল হওয়া থেকে শুরু করে নামীদামী বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনকারীরা। এমন ভিন্নতা নিয়েও তাঁরা নিজস্ব কর্মজগৎ ও সমাজে গুণীজন ও শ্রদ্ধেয় হিসেবে স্বীকৃত।
তাঁদের মধ্যে আছেন শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, কথাসাহিত্যিক, শিল্পী, আইনজীবী, গবেষক, শিক্ষক, সমাজকর্মী ও সংগঠক, চলচিত্র নির্মাতা, মানবাধিকার কর্মী। তাঁরা সবাই কখনো মিছিলে-স্লোগানে, কখনো কালি ও কলমে, কখনো নীতিমালা তৈরিতে, কখনো নারী নেতৃত্ব বিকাশে, কখনো তৃণমূল নারীদের সংগঠিত করার মাধ্যমে নারী আন্দোলনকে বেগবান করতে এবং নারীর সমতা ও স্বাধীনতার জন্য কাজ করে চলেছেন আজও।
ভিন্নতাগুলোর মধ্যেও তাঁদের মাঝে অভিন্নতার দিকও রয়েছে জোরালোভাবে—তাঁরা ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে সমাজ বদলের কারিগর। তাঁরা সবাই একেকজন লড়াকু, যোদ্ধা, নারীবাদী। এই গুণী ব্যক্তিবর্গ দক্ষতা ও পেশাদারিত্বে সমুজ্জ্বল। মূল্যবোধে তাঁরা প্রবলভাবে মানবিক এবং সব বৈশিষ্ট্য ও পরিচয়ের নারী-পুরুষের সমতা, সমানাধিকার ও মুক্তিতে বিশ্বাসী। তাঁদের জীবনসংগ্রাম, সাফল্য ও অভিজ্ঞতার গল্পগুলো আমাদের অনুপ্রেরণার অমূল্য ভাণ্ডার। তাঁদের কাছ থেকে শোনা কথা ও উপলব্ধিগুলো সাজানোর চেষ্টা করা হয়েছে ‘নারীবাদী হয়ে ওঠার গল্প’ সংকলনে। তাঁদের কণ্ঠস্বর শোনা এবং দিকে দিকে প্রতিধ্বনিত করার প্রয়াস এই গ্রন্থটি।