"খুতুবাতে হাকিমুল ইসলাম" একটি চিন্তাশীল ও প্রজ্ঞাপূর্ণ বয়ান সংকলন, যেখানে ইসলামী চিন্তা, সমাজনীতি ও আত্মশুদ্ধির দিকনির্দেশনা অত্যন্ত গভীরভাবে উপস্থাপিত হয়েছে।
📘 সংক্ষিপ্ত রিভিউ:
বইয়ের বৈশিষ্ট্য:
আলিমদের জন্য দিকনির্দেশনা: বইটি মূলত উলামা, তালিবে ইলম এবং ইসলামী চিন্তাবিদদের জন্য একটি দিকনির্দেশনামূলক সংকলন। এতে রয়েছে মাদরাসা শিক্ষার উদ্দেশ্য, উলামার দায়িত্ব, এবং সমাজে ইসলামের ভূমিকা নিয়ে গভীর আলোচনা।
সমসাময়িক সমস্যার সমাধানমূলক দৃষ্টিভঙ্গি: আল্লামা তৈয়্যব (রহ.) তাঁর বয়ানে মুসলিম সমাজের চ্যালেঞ্জ, পাশ্চাত্য প্রভাব, এবং দ্বীনের সঠিক অবস্থান নিয়ে যুক্তিপূর্ণ বিশ্লেষণ করেছেন।
আত্মশুদ্ধি ও দাওয়াতের আহ্বান: প্রতিটি খুতবা পাঠককে আত্মিক জাগরণ, আমলের প্রতি আগ্রহ এবং সমাজে ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানায়।
ভাষার সৌন্দর্য ও যুক্তির গভীরতা: লেখকের ভাষা অত্যন্ত প্রাঞ্জল, অথচ গভীর। যুক্তি, কুরআন-হাদীসের উদ্ধৃতি এবং বাস্তব উদাহরণে সমৃদ্ধ প্রতিটি বক্তব্য।
📚 পাঠকের অভিজ্ঞতা:
আলিম ও তালিবে ইলমদের জন্য অপরিহার্য: যারা ইসলামী দাওয়াত ও চিন্তায় সক্রিয়, তাদের জন্য এটি একটি মৌলিক পাঠ্য।
বক্তৃতা প্রস্তুতির সহায়ক: ইসলামিক বক্তৃতা বা ওয়াজের প্রস্তুতিতে এই বইটি একটি চমৎকার রেফারেন্স হিসেবে কাজ করে।
আধ্যাত্মিক উন্নয়নের অনুপ্রেরণা: সাধারণ পাঠকও বইটি থেকে আত্মশুদ্ধি ও দ্বীনের গভীরতা উপলব্ধি করতে পারেন।
এই গ্রন্থটি শুধু একটি বক্তৃতা সংকলন নয়—এটি একটি চিন্তার জগৎ, যা পাঠককে ইসলামের মূল উদ্দেশ্য, সমাজে তার ভূমিকা এবং ব্যক্তিগত জীবনে তার প্রভাব সম্পর্কে গভীরভাবে ভাবতে বাধ্য করে।
কারী মুহাম্মদ তৈয়ব কাসেমি (জন্ম: ১৮৯৭ - মৃত্যু: ১৭ জুলাই ১৯৮৩) ভারতীয় ও দেওবন্দি ধারার ইসলামী চিন্তাবিদ। তিনি দারুল উলুম দেওবন্দের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ কাসেম নানুতাবির দৌহিত্র। তিনি ১৯২৯ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত দারুল উলুম দেওবন্দের মুহতামিম (উপাচার্য) ছিলেন। তার পিতার নাম মাওলানা হাফেয মুহাম্মাদ আহমদ। সাত বছর বয়সে তিনি দারুল উলূম দেওবন্দে ভর্তি হন। প্রথমে কুরআন হিফজ করেন। তারপর পাঁচ বছর ফারসী, গণিত স্তরের শিক্ষা অর্জন করে আরবির সিলেবাস আরম্ভ করেন। হাদিসের বিশেষ সনদ তিনি লাভ করেছিলেন তৎকালীন বিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মিরী রহ., আযীযুর রহমান উসমানী, হাবীবুর রহমান উসমানী, শাব্বীর আহমদ উসমানী এবং আসগর হুসাইনের মতো বিখ্যাত মনীষীগণ থেকে। তিনি দারুল উলুম দেওবন্দে শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন আরম্ভ করেন। ১৯২৪ সালের শুরুতে দেওবন্দের নায়েবে মুহতামিম এবং ১৯২৯ সালে তাকে মুহতামিম করা হয়। তার আমলে দারুল উলূমে ব্যাপক উন্নতি হয়। মুসলিম ইউনিভার্সিটি আলীগড় এবং অন্যান্য ইউনিভার্সিটিসমূহে তার বয়ান ছিল বিশেষ সমাদৃত । তার রচিত গ্রন্থের সংখ্যা শ’য়ের কাছাকাছি।