ব্যক্তিগত চরিত্রের দৃষ্টিকোণ থেকে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে একজন সাধারণ মানুষ না বলে বলা যায় অতি সাধারণ মানুষ। আমরা তাঁদেরকেই অতি মানুষ বলে আখ্যায়িত করি, যাঁরা সাধারণ মানুষের নীচুতা, হীনতা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত এবং সেই সঙ্গে এরও ঊর্ধ্বে বিচরণ করেন যাঁর মাঝে সাধারণ চারিত্রিক বিচ্যুতি বলতে তেমন কিছু থাকে না।
শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মৃত্যুবরণ করেছেন মাত্র ৪৫ বছর বয়সে। ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ যখন তিনি বাংলার মানুষকে মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়ে ‘স্বাধীনতা ঘোষণা’ করেছিলেন তখন জাতি পেয়েছিল সঠিক দিঙ্নির্দেশনা। দেশ স্বাধীনের পর তিনি আমাদের মহান সেনাবাহিনীর মাধ্যমে জাতির সেবা করে গেছেন। জ্যেষ্ঠ হওয়ার পরও তাঁকে যখন সেনাপ্রধান করা হয়নি, তখন তিনি নীরবে রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্তকে হাসিমুখে মেনে নিয়েছেন। কোনো ক্ষোভ বা রাগ তখন দেখিয়েছিলেন-এমন তথ্য কেউ দিতে পারবে না।
১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহি-জনতার বিপ্লবে যখন তিনি মুক্ত, সেই সময়ও ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে বসার ইচ্ছার কথা তিনি প্রকাশ করেননি। সময়ই তাঁকে দেশের দায়িত্ব নিতে বাধ্য করেছে। জনগণ তাদের আস্থার প্রতীক হিসেবে জিয়াকে বেছে নেন।
জিয়া রাজনীতিবিদ ছিলেন না; কিন্তু দেশের মাটির গন্ধ তাঁকে রাজনীতিবিদ হিসেবে তৈরি করতে সহায়তা করে। তিনি ক্ষমতায় থাকাকালীন গ্রামগঞ্জে ছুটে গেছেন বছরের অর্ধেক সময়েরও বেশি। যেখানে কোনো নেতা-মন্ত্রী-এমপি-চেয়ারম্যান খবর নেন না জীর্ণশীর্ষ দেহের মানুষের, তিনি তাদের সঙ্গেও হাত মিলিয়েছেন, একসঙ্গে কোদাল ধরে মাটি কেটেছেন। বার বার বলেছেন—‘দেশের উন্নয়ন করতে হলে পরিশ্রম করতে হবে। গ্রাম থেকে শুরু করতে হবে।’
শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের গ্রামীণ উন্নয়নের চিন্তাই অর্থনীতিকে যে একটি শক্তিশালী রূপ দিবে এটা দেশ-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা উপলব্ধি করতে পেরেছিল। বাংলাদেশ সমৃদ্ধ হলে যারা ক্ষতির মুখোমুখি হবে বলে সবসময় চিন্তা করত, তাদেরই ষড়যন্ত্র ও উসকানিতে ১৯৮১ সালের ৩০ মে আমাদের প্রাণপ্রিয় নেতা হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।
জিয়াউর রহমান শহিদ হওয়ার পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনেক ঘটনা ঘটেছে, যদিও সে সময় আমাদের দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মরহুম বিচারপতি আবদুস সাত্তার ক্ষমতায় ছিলেন। গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, তখন বিএনপি সরকারকে চাপে ফেলে ও ষড়যন্ত্র করে এরশাদ বহু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সংবাদপত্রে নানা খবর প্রকাশ করিয়েছেন। এরশাদের উদ্দেশ্য ছিল—‘দায়দায়িত্ব বিএনপির ওপর বর্তাবে।’
অবশেষে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ বিচারপতি আবদুস সাত্তার ক্ষমতাচ্যুত হন। ক্ষমতা হারায় জনসমর্থিত দল বিএনপি। এরপর বেগম খালেদা জিয়ার হাত ধরে আমাদের পথ চলা, এখনো আমাদের প্রিয় দেশনেত্রী আমাদের ভরসা।
জন্ম ১৯৭৮ সালের ৫ মে সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জের চন্দরপুর গ্রামে নানার বাড়িতে। পৈত্রিক নিবাস গোয়াইনঘাট উপজেলার দেয়ারগ্রামে। পিতা শামসুর রহমান ইরানে অবস্থানকালে ১৯৭৮ সালে ২৪ সেপ্টেম্বর পরলোকগমন করেন। মা হেনা বেগম, বড় ভাই লন্ডন প্রবাসী সূফী সুহেল আহমদ, মেজ ভাই ছায়েদ আহমদ জুয়েল, বড় বোন ডাঃ সুমা বেগম, স্ত্রী সফিনা বেগম মুনমুন, দুই ছেলে নাফিস রহমান ও নাদিম রহমান, ভাগ্না আহনাফ আমীর চৌধুরী আরাফ ও ভাগ্নি রামিশা মালিহা চৌধুরী আরিশা-এই নিয়েই তার পারিবারিক জগত। ১৯৯৭ সালে দৈনিক দিনকালের রাজনীতি পাতায় নিবন্ধ লেখার মধ্যে দিয়ে লেখক জীবনের সূচনা। এরপর দৈনিক সংগ্রাম, দৈনিক জনতা, দৈনিক ইনকিলাব, সাপ্তাহিক অগ্রযাত্রা, সাপ্তাহিক জনতার ডাক, দৈনিক সিলেটের ডাক, দৈনিক শ্যামল সিলেটসহ বিভিন্ন দৈনিক ও সাপ্তাহিকে নিয়মিত লেখালেখি করছেন। লেখালেখি ছাড়াও সমাজকল্যাণমূলক কাজে জিবলু রহমান সক্রিয়ভাবে জড়িত। তিনি ‘শামসুর রহমান ফাউন্ডেশন’ নামের একটি শিক্ষা উন্নয়ন সংগঠনের সদস্য-সচিব। ‘শামসুর রহমান ফাউন্ডেশন’ নামের একটি শিক্ষা উন্নয়ন সংগঠনের সদস্য-সচিব। ‘শামসুর রহমান ফাউন্ডেশন’ প্রতি বছর সিলেট বিভাগের ৫ম ও ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠান এবং গোয়াইনঘাটে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাহায্য প্রদান করে আসছে। জিবলু রহমান ‘শামসুর রহমান ফাউন্ডেশনের’ কার্যক্রমকে শিক্ষা উন্নয়নের একটি মডেলে উন্নীত করতে চান, যাতে দেশের অন্যান্য বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিরাও এটা অনুসরণ করে নিজ নিজ এলাকায় শিক্ষা উন্নয়নে ফলদায়ক অবদান রাখতে পারেন। জিবলু রহমান কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ (সিলেট), সিলেট মোবাইল পাঠাগার (সিলেট), রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির (সিলেট) আজীবন সদস্য।